আম চাষিরা জানান, চলতি বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে শীত কিছুটা দেরিতে শুরু হওয়ায় বিরুপ প্রভাব পড়েছে। মৌসুমের শুরুতে মুকুল ফুটতে শুরু করলেও; হঠাৎ রাতের ঠাণ্ডা তাপমাত্রায় তা অনেকটা থেমে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সরজমিনে জেলার বিভিন্ন বাগান ঘুরে দেখা গেছে, বড় আকারের চেয়ে ছোট ও মাঝারি আকারের গাছগুলোতে কিছুটা মুকুল এসেছে। বড় বাগানগুলোতে দেখা গেছে বেশিরভাগ গাছেই মুকুল আসেনি। বাগানের কিছু গাছের যে অংশে রোদ পড়েছে সে অংশে মুকুল ফুটেছে। আবার একটি গাছের একাংশে মুকুল আসলেও, আরেক অংশে আসেনি। যেসব গাছে ইতোমধ্যে মুকুল ফুটেছে তা নষ্ট হচ্ছে কুয়াশায়।
জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার কালুপুর এলাকার আম চাষি আল আমিন বলেন, ‘গত বছর এই সময় শতভাগ মুকুল এসেছিল; এবার তা অর্ধেকেরও কম। তার ওপর পোকার আক্রমণে আমরা চিন্তিত।’
শামসুল আলম নামে আরেক আম চাষি বলেন, ‘মুকুল ফোটার তেমন সময় আর নাই। এবার মুকুল ভালো না হওয়ায় ফলনেও প্রভাব পড়বে।’
শিবগঞ্জ একাডেমি মোড়ের আম বাগান মালিক ইসমাইল খান শামীম বলেন, ‘বাগানের সব গাছে আশানুরুপ মুকুল এখনও আসেনি। সব মিলিয়ে খুবই চিন্তায় আছি।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. নজরুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বরাবরই চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমের মুকুল আসতে কিছুটা দেরি হয়। তবে এবার আরও বেশি দেরি হওয়ায় মুকুলের পরিমাণ অনেক কম। এ অবস্থায় মুকুল ঝরা ও পোকার আক্রমণ থেকে মুকুল রক্ষায় ইমিডাক্লোপ্রিড গ্রুপের কীটনাশক ও ম্যানকোজেব গ্রুপের ছত্রাকনাশক বাগানে প্রয়োগের পরামর্শ দিচ্ছি। আর যেসব গাছে এখনো মুকুল আসেনি বা আসার সম্ভাবনা আছে সেসব গাছে সমন্বিতভাবে চাষিদের স্প্রে করার পরামর্শ দিচ্ছি।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের দেওয়া তথ্য মতে, এ বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩৩ হাজার হেক্টর জমির বাগানে ২ লাখ ৩৯ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছর যা ছিল ২ লাখ ৭৫ হাজার মেট্রিক টন এবং চাষাবাদ হয়েছিল ৩০ হাজার ৮১০ হেক্টর জমিতে।