মান্দায় বাঁধ ভেঙে কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি

প্লাবিত এলাকাগত কয়েক দিনের একটানা বর্ষণ এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে নওগাঁর আত্রাই ও ছোট যমুনাসহ প্রায় সবকটি নদীর পানি। জেলার মান্দা উপজেলার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত আত্রাই নদীর পানি জোতবাজার পয়েন্টে এখন বিপদসীমার ১২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বর্তমানে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে করে বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) সকাল ১০টা পর্যন্ত মান্দায় ৭টি বাঁধ ভেঙে কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তবে এখনও সেখানে সরকারি সাহায্য পৌঁছায়নি।

নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বন্যার কবলে পড়ে আত্রাই ও রানী (ফকিরনি) নদীর উভয় তীরের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের প্রায় ৫০টি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে এ দুই নদীর উভয় তীরের ৭টি বেড়িবাঁধ ও জোকাহাট দাসপাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে মান্দা-আত্রাই আঞ্চলিক সড়কের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

উঁচু স্থানে আশ্রয় নিচ্ছেন বন্যাদুর্গতরাবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় দুর্গত এলাকার মানুষ বন্যা নিয়ন্ত্রণ মূল বাঁধে আশ্রয় নিতে শুরু করেছেন। এসব বন্যা দুর্গত এলাকার মানুষজন গবাদিপশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ বাঁধতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্বোচ্ছাসেবকরা প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

ভেঙে যাওয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধগুলো হচ্ছে পার—নুরুল্লাবাদ মণ্ডলপাড়া, চকরামপুর, কয়লাবাড়ি ও বাইবুল্যা।

এদিকে, পানির প্রবল চাপে আত্রাই ও রানীনগরে নদীর উভয় তীরের বনকুড়া, দক্ষিণ চকবালু, জোকাহাট, চকরামপুর, উত্তর চকরামপুর, কয়লাবাড়ি, শহরবাড়ি ভাঙ্গীপাড়া, নুরুল্লাবাদ নিখিরাপাড়া, করাতিপাড়া, জোতবাজার, বাগাতিপাড়া, পশ্চিম নুরুল্লাবাদ, শামুকখোল, লক্ষ্মীরামপুরসহ কমপক্ষে ৫০টি পয়েন্ট চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

এসব ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ টিকিয়ে রাখতে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে দিনরাত কাজ করছেন স্থানীয়রা। বাঁধে রাতে বসানো হয়েছে পাহারা। এছাড়া কালিকাপুর, ফেরিঘাট, কয়াপাড়া, কামাকুড়ি, দোসতি প্রসাদপুরবাজার, পাজরভাঙ্গা, পলাশবাড়িসহ আরও বেশকিছু এলাকা ভাঙনের মুখে পড়েছে।