ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জিআর চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ

চাল বিতরণে অনিয়ম



বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার তেকানীচুকাইনগর ইউনিয়নে ক্ষমতাসীন দল সমর্থিত চেয়ারম্যান আশরাফ আলী মন্ডলের বিরুদ্ধে বন্যা দুর্গতদের মাঝে জিআর চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, তিনি অধিকাংশ ইউপি সদস্যকে (মেম্বর) না জানিয়ে নিজের ইচ্ছেমতো তালিকা তৈরি করেন। অভিযোগ প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান আশরাফ আলী জানান, ৯ ইউনিয়নের মধ্যে তিনটিতে প্রায় সাড়ে ৯ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করেছেন। পরবর্তীতে বরাদ্দ পেলে অবশিষ্ট ছয় ইউনিয়নে দেবেন। তিনি তার ভাবমূর্তি রক্ষায় রিপোর্ট না করতে বিশেষ অনুরোধ করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোনাতলা উপজেলার বন্যা দুর্গত তেকানীচুকাইনগর ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের ১১ গ্রামের ৬৩৩ জন দুস্থদের মাঝে ১৫ কেজি করে প্রায় সাড়ে ৯ মেট্রিক টন বিতরণের জন্য জিআর বরাদ্দ আসে। চেয়ারম্যান
আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফ আলী মন্ডল ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে শুধু ৩, ৪ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বারদের সঙ্গে নিয়ে পছন্দের তালিকা তৈরি করেন। মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) চেয়ারম্যান চাল বিতরণ করেছেন। অপর ছয়টি ওয়ার্ডের মেম্বাররা জানতে পারলে তাদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অনেকের অভিযোগ করেন, তাদের ১৫ কেজির জায়গায় ১১-১২ কেজি চাল দেওয়া হয়েছে। সংরক্ষিত-১ (১, ২, ও ৩ নম্বর) ওয়ার্ডের মেম্বর রওশন আরা ও অনেকে অভিযোগ করেন, ইউনিয়নে কোনও বরাদ্দ এলে চেয়ারম্যান তাদের অবহিত করেন না। তিনি নিজের ইচ্ছেমতো পছন্দের দুস্থদের তালিকা তৈরি ও বিতরণ করে থাকেন। এ ব্যাপারে চেয়ারম্যানকে অনুরোধ করলেও তিনি শোনেননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেম্বাররা অভিযোগ করেন, চেয়ারম্যান আগে টিনের বাড়িতে থাকলেও এখন কোটি টাকা খরচ করে বিল্ডিং করছেন।
জিআরের চাল বিতরণ প্রসঙ্গে সোনাতলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিনহাদুজ্জামান লিটন জানান, তেকানীচুকাইনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশরাফ আলী ত্রাণ বিতরণের আগে তাকে সঙ্গে নিয়ে ভেটিকতাইর, বাংশাবাড়ি, মোহাব্বতের পাড়া, দাউরিয়ারপাড়াসহ পাঁচটি গ্রামে তালিকা তৈরি
করতে গিয়েছিলেন। চেয়ারম্যানের (আশরাফ আলী) দেওয়া শর্তানুসারে দলীয় কোনও নেতাকর্মীকে সঙ্গে নেওয়া হয়নি। সেখানে দু’জন মেম্বার উপস্থিত ও তিন মেম্বার অনুপস্থিত ছিলেন। ত্রা  বিতরণের পর তিন ওয়ার্ডের মেম্বার ফোন করে তাদের বঞ্চিত করার অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে আশরাফ আলী জানান, তিনি জিআরের সাড়ে ৯ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করেছেন। অবশিষ্ট কিছু গ্রাম পুলিশ, পরিষদের কর্মচারী ও পরিচিতদের দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে বরাদ্দ পেলে অবশিষ্ট ছয়টি ওয়ার্ডে দেওয়া হবে।

তার দাবি, কাউকে চাল ওজনে কম দেওয়া হয়নি। তিনি কোনও চাল আত্মসাৎ বা বিক্রি করেননি। তিনি শিক্ষক ছিলেন, এ নিয়ে পত্রিকায় লিখলে তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে। তাই রিপোর্ট না করতে বিশেষ অনুরোধ করেন।