ছাত্রলীগ নেতা বিজয় হত্যাকাণ্ড: প্রধান আসামি গ্রেফতার






গ্রেফতারকৃত শিহাব আহমেদ জিহাদ সিরাজগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক এনামুল হক বিজয় হত্যা মামলার প্রধান আসামি জেলা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক শিহাব আহমেদ জিহাদকে অবশেষে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। টানা ৪০ দিন পলাতক থাকার পর তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় ডিবি পুলিশের সদস্যরা। শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে সিরাজগঞ্জ রোড গোলচত্বর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

জিহাদ সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার দিয়ারধান গড়া (সর্দারপাড়া) মহল্লার শামীম আহম্মেদের ছেলে। তাকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিবি পুলিশের ওসি মিজানুর রহমান। শুরুতে মামলাটি সদর থানা পুলিশ তদন্ত করলেও বর্তমানে তদন্ত করছে ডিবি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর আদালতের মাধ্যমে বিকালে আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আসামির রিমান্ডের আবেদনও করা হবে জানান তিনি।
বিজয় হত্যাকাণ্ডের পর অপর আলোচিত আসামি জেলা ছাত্রলীগের সাময়িক বহিষ্কৃত নেতা আল আমিন গ্রেফতার হলে জিহাদ শুরুতে গা-ঢাকা দেয়। মামলাটি ডিবি তদন্ত করার পরও এতদিন জিহাদ ধরা না পড়ায় বিভিন্ন ফোরামে আলোচনায় বিব্রত হন জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পুলিশ সুপারও ডিবি পুলিশ সদস্যদের চাপ দেন। এরই মধ্যে স্থানীয়ভাবে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ায় পুলিশ সুপারের নির্দেশে জেলার শাহজাদপুর, এনায়েতপুর ও চৌহালীর ওসিদের পরিবর্তন করা হয়। যে কারণে উৎকন্ঠায় পড়েন ডিবির সদস্যরা। ব্যাপক সোর্স নিয়োগের পর অবশেষে তারা জিহাদকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন বলে একাধিক সূত্রে জানা যায়।


গত ২৬ জুন জেলা ছাত্রলীগ আয়োজিত প্রয়াত সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলে যোগদানের পথে জেলা শহরের বাজার স্টেশন এলাকায় জেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ও কামারখন্দ সরকারি হাজী কোরপ আলী ডিগ্রী কলেজ শাখার সভাপতি এনামুল হক বিজয়কে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করা হয়। হাসপাতালে বাঁচার জন্য ৯ দিন লড়াই করার পর অকাল মৃত্যু হয় বিজয়ের। বিজয় মারা যাওয়ার আগে হামলার ঘটনায় তার বড় ভাই রুবেল বাদী হয়ে শিহাব আহমেদ জিহাদকে প্রধান আসামি করে ১০-১২ জনের নামে সদর থানায় মামলা করেন। তারপর সেই মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর হয়। এ মামলায় এজাহারভুক্ত চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।



অন্যদিকে, বিজয় নিহতের পর ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের পূর্ববর্তী দ্বন্দ্ব ও ক্ষোভ চরম আকার ধারণ করে। পরস্পরবিরোধী অবস্থান ও সংঘর্ষে সিরাজগঞ্জ শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক একরামুল হক’সহ বেশ ক’জন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন। একে অপরের বিরুদ্ধে ৬টি মামলায় জ্ঞাত-অজ্ঞাত মিলে সাত শতাধিক নেতাকর্মী আসামি হন। কেন্দ্রের নির্দেশে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের মাধ্যমে জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের সতর্ক করা হয়। পূর্ব আলোচনা ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের অনুমতি ছাড়া দলীয় সভা-সমাবেশও অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়।