জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি চিত্ত রঞ্জন সাহা জানান, গত বছর নাটোরে ৩৬৬টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা হলেও এবার এখন পর্যন্ত ৩৫১টি মণ্ডপ এই পূজা উদযাপনে প্রস্তুত হচ্ছে। তবে আরও একটি মণ্ডপে পূজা হতে পারে। পূজা উদযাপনের জন্য ইতোমধ্যেই সরকারি চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দিঘাপতিয়া ও নাটোর রাজার তিনটি মন্দিরের পাশাপাশি পৌর এলাকার মণ্ডপে অতিরিক্ত বরাদ্দের জন্য কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে।’
পৌর এলাকায় ৩৫টি মণ্ডপ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পৌরসভার পক্ষ থেকে ওই সব মণ্ডপে সাধ্যমতো সহায়তার পাশাপাশি বিসর্জন ঘাট নির্মাণে বরাদ্দ দেবে পৌর কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে রাজার তিন মন্দিরে বাড়তি বরাদ্দ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে জেলা প্রশাসন।’
জেলা প্রশাসক শাহ রিয়াজ জানান, অন্য বছরের মতো এবারও প্রতিটি মণ্ডপকে ৫শ’ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দুই দিনের মধ্যেই চালগুলো প্রতিটি কমিটি পাবে। এবার চালের দাম বেশি থাকায় পূজা উদযাপনে বাড়তি কিছু টাকা পাবেন কমিটি। অপরদিকে সরকারি নির্দেশ মেনে আড়ম্বরপূর্ণ লাইটিং বা তোরণ নির্মাণ না করায় পূজার খরচ কমবে।
সদর উপজেলার ভাটোদাঁড়া কালিবাড়ি চত্বরে প্রতিমা কারিগর সুজন কুমার জানান, গত ১০ দিন ধরে তিনি অর্ডারি প্রতিমা তৈরি করছেন। ইতোমধ্যেই কয়েকটি প্রতিমায় রঙের কাজ শুরু হয়েছে। ২১ অক্টোবর রাত থেকেই প্রতিমা সাপ্লাই শুরু হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সুজন জানান, এবারে ১৬ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২৮ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রতিমা সেটের অর্ডার পেয়েছেন তিনি। তিনি প্রায় ২০-২২ সেট প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন।
দিঘাপতিয়া কৃষ্ণজিউ ও কালিমাতা মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার শীল জানান, তিনি ১৬ হাজার টাকায় প্রতিমা সেটের অর্ডার দিয়েছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তপন জানান, সরকারি ও পূজা উদযাপন কমিটির নির্দেশনা মেনেই পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি নিয়েছে কমিটি। তবে সরকারি বরাদ্দের চাল সিন্ডিকেটের কারণে বাজার দামে বিক্রি করা যায় না। গত বছর পূজায় লক্ষাধিক টাকা খরচ হলেও সরকারি বরাদ্দের চাল বিক্রি ও পূজাকল্যাণ পরিষদের মাধ্যমে তারা পেয়েছিলেন মাত্র সাড়ে ১৩ হাজার টাকা। স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের সহায়তার পরও তাদের বেশি খরচ হয় ১৭ হাজার টাকা। এবার চালের দাম বেশি থাকলেও ৫শ’ কেজি বিক্রি করে সিন্ডিকেটের কারণে হয়তো তারা ১২ হাজার টাকার ওপরে পাবেন না। প্রকারান্তরে ষষ্টি থেকে নবমী রাত পর্যন্ত মণ্ডপ পাহারা নিয়ে রয়েছে উদ্বেগ। আনছার-পুলিশ না থাকায় পূজায় দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা ঠিকমতো তারা নিশ্চিত করতে পারবেন কিনা তা নিয়ে রয়েছেন দুশ্চিন্তায়।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, পূজার সময় মণ্ডপের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত পুলিশ ও আনসার বাহিনী টহলে থাকবে। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় দুর্গাপূজা উদযাপন হবে বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি।