নওগাঁয় কেজিতে চালের দাম বেড়েছে ৫ টাকা

নওগাঁর বাজারে চাল



দেশের অন্যতম বৃহৎ ধান-চালের মোকাম জেলা নওগাঁ। বাজারে ধানের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সেখানে বেড়েছে চালের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে নওগাঁর পাইকারি বাজারে মোটা ও চিকন চালের দাম কেজি প্রতি ৩-৪ টাকা বেড়েছে, যা খুচরা বাজারে বেড়েছে কেজি প্রতি ৪-৫ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে চালের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ। 



ব্যবসায়ীরা বলছেন, কয়েক দফায় বন্যায় ক্ষতির কারণে আমনের উৎপাদন কম হয়েছে। ফলে বাজারে ধানের আমদানি কম। ধানের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে পাইকারি ও খুচরা বাজারে চালের মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে। চালের ঊর্ধ্বমুখী বাজার লাগাম টেনে ধরতে পর্যাপ্ত চাল আমদানি করতে হবে।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় এক লাখ ৯১ হাজার ৭শ’ হেক্টর জমিতে আমন উৎপাদন হয়েছে। জেলার মহাদেবপুর ও স্বরসতিপুর বাজার এবং নওগাঁ পৌর খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাজারে প্রতিমণ স্বর্না-৫ জাতের ধান বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১৪০ টাকা, গুটি স্বর্ণা ১ হাজার ৬০, কাটারি ১ হাজার ৩৫০ এবং জিরাশাইল ১ হাজার ৩৭০ টাকা। গত ১৫ দিনের ব্যবধানে প্রতিমণ ধানের দাম বেড়ে ১৫০-২০০ টাকা। স্বর্না-৫ নতুন চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪৬-৪৮ টাকা, জিরাশাইল ৫৬-৫৮ টাকা, কাটারিভোগ-সম্পাকাটারি ৫৬-৫৮ টাকা, আটাশ চাল ৪৮-৪৯ টাকা। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রকারভেদে প্রতি কেজি চালের দাম ৪-৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।

মাস্টারপাড়া নিবাসী আক্কাজ আলী বলেন, সব চালের দাম বেড়ে গেছে। অথচ আমাদের আয় বাড়েনি। চাল কেনার বাড়তি টাকা জোগাড় করা আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।

নওগাঁ ধান-চাল আড়তদার সমিতির সভাপতি নিরোদ বরন সাহা চন্দন বলেন, কৃষক পর্যায়ে ধানের দাম বেশি হওয়ার কারণে স্বাভাবিকভাবেই চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ধানের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ পরপর কয়েক দফা বন্যায় আমনের ব্যাপক ক্ষতি। এখন বাজারে ধানের সংকট দেখা দিয়েছে। দাম বেশি হওয়ায় চালের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এসব কারণেই চালের বাজার ঊর্ধ্বমুখী।

তিনি আরও বলেন, সরকার ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এসব চাল হয়তো সরকার বিভিন্ন বাহিনীসহ খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে ব্যয় করবে। চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হলে আমদানি বাড়াতে হবে। আমদানি শুল্ক কমিয়ে বেসরকারি খাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ চাল আমদানি করা হলে চালের বাজারের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। 

নওগাঁ চালকল মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ রফিকুল ইসলাম বলেন, ধানের বাজারের ওপর চালের বাজার নির্ভর করে। মিলাররা বাজার থেকে ধান কিনে চাল উৎপাদন করে। ধান বেশি দামে কিনতে হলে বাজারে দাম বেশি দিয়ে চাল বিক্রি করতে হয়। যেহেতু সরকার চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে এতে করে বাজার স্থিতিশীল থাকার সম্ভবনা রয়েছে।