রাজশাহী অঞ্চলে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। বাস না থাকায় সকাল থেকে বিকল্প যানবাহনে করে বাড়তি ভাড়ায় যাত্রীদের বিভিন্ন গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। এদিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছেন মঙ্গলবার (২ মার্চ) রাজশাহীতে তাদের সমাবেশ ঘিরে ঘোষণা ছাড়াই বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে এবং ভোট চুরি ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে রাজশাহীতে বিএনপির এ বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তবে সমাবেশ নগরীর কোথায় হবে সে বিষয়ে সোমবার (১ মার্চ) দুপুর পর্যন্ত জানাতে পারেনি বিএনপির নেতাকর্মীরা।
তবে রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন চৌধুরী বলেন, বগুড়ায় তাদের এক শ্রমিককে মারধর করা হয়েছিল। মারধরকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।
সোমবার (১ মার্চ) সকাল থেকে হঠাৎ বন্ধের কারণে দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ যাত্রীরা। তারা অনেকেই কাউন্টারে এসে ফিরে গেছেন। এছাড়া বিকল্প পথে অন্য যানবাহনে অনেকেই নিজ নিজ গন্তব্যে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ কাউন্টারগুলোও বন্ধ দেখা গেছে।
এদিকে দুপুরে নগরীর পদ্মা কনভেনশন হলে স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী ও বিভাগীয় সমাবেশ উপলক্ষে রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমাদের বিভাগীয় সমাবেশের জায়গা দেওয়া হয়নি। আর বাস বন্ধ রাখার কারণ-বিভাগীয় সমাবেশে যাতে মানুষ না আসতে পারে, এছাড়া কিছু না।’
প্রশাসন যদি সমাবেশ করতে না দেয়। তাহলে আপনারা কি করবেন। এমন প্রশ্নে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আমরা সমাবেশ করবো।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ( সদর) গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, তাদেরকে মৌখিক অনুমতি দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে অনুষ্ঠান ইনডোরে করতে বলা হয়েছে। পরে চিঠি করে তাদেরকে দেওয়া হবে।
পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে বাস চলাচল বন্ধ
এদিকে কোনও ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বাস মালিক সমিতি।
তবে কি কারণে বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে, এ বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানায়নি প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্টরা। বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ, মঙ্গলবার রাজশাহীতে বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করেই মূলত প্রশাসনের অঘোষিত নির্দেশে বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
এতে গন্তব্যস্থলে যেতে না পারায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।
স্থানীয়রা জানান, সকাল ৮ টার দিকে শহরের বিশ্বরোড মোড়ে চেকপোস্ট বসায় পুলিশ। এরপরই পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় বাস চলাচল।
তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুব আলম খান বলেন, ‘পুলিশের বাধায় বাস চলাচল বন্ধ হয়নি। নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে পুলিশ জেলার বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিতই চেকপোস্ট বসিয়েছে। যানবাহন চলাচলে কোনও প্রতিবন্ধকতা বা সাধারণ মানুষের চলাচলে বাধা সৃষ্টির উদ্দেশ্য নেই।’
তবে কেন বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি তিনি।
জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এ এফ এম লুৎফর রহমান ফিরোজ বলেন, ‘আগামীকাল পর্যন্ত বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।’