বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) আসনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলু ওরফে শওকত আলী গোলবাগী বাবলুকে দুদক বগুড়া সমন্বিত কার্যালয়ে তলব করা হয়েছে। রবিবার (৭ মার্চ) বিকালে এক নোটিশে আগামী ১৪ মার্চ বেলা ১০টার দিকে তাকে হাজির হতে বলা হয়েছে। দুদকের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, গত ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৭ আসনে বিএনপি প্রার্থী মোরশেদ মিল্টন নির্বাচন করতে ব্যর্থ হন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আসনটি শরিক জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয়। মরহুম আওয়ামী লীগ নেতা আজম খানের স্ত্রী ফেরদৌস আরা খান স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে দলীয় নেতাকর্মীরা তাকে সমর্থন দেন। এতে জাপা প্রার্থীর অবস্থান নড়বড়ে হয়ে যায়। তারা ছাড়াও রেজাউল করিম বাবলু ওরফে শওকত আলী গোলবাগী বাবলু ট্রাক মার্কা প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন। বিএনপি ও জামায়াতের ভোটাররা সমর্থন দেওয়ায় জাপা প্রার্থী আলতাব আলীকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে বাবলু বিজয়ী হন।
এদিকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর বাবলুর বিরুদ্ধে হলফনামায় মামলার তথ্য গোপনের অভিযোগ ওঠে। নির্বাচনি হলফনামায় তিনি বার্ষিক আয় পাঁচ হাজার টাকা দেখান। পুরনো মোটরসাইকেলে চলাফেরা করতেন। দুই মাসের মাথায় তিনি ৩৪ লাখ টাকা দিয়ে গাড়ি কেনেন। তখন সংসদ সদস্য বাবলু দাবি করেছিলেন, গাড়িটি তার বন্ধুরা উপহার দিয়েছেন। তবে এলাকায় প্রচারণা ছিল, স্থানীয় অবৈধভাবে গড়ে তোলা ইটভাটার মালিকরা ভাটারক্ষায় তাকে গাড়িটি কিনে দিতে বাধ্য হন। এছাড়া তিনি গত ২০২০ সালের অক্টোবরে দামি পিস্তল হাতে ফেসবুকে ছবি দিয়ে তিনি নানা আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি করেন।
দুদক বগুড়া সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম জানান, বিভিন্ন সূত্রে ও পত্রিকায় রিপোর্টে সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলু ওরফে শওকত আলী গোলবাগী বাবলু এবং তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ পাওয়া যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিক তদন্ত করলে অভিযোগের সত্যতা মেলে। তাই সংসদ সদস্য বাবলুকে আগামী ১৪ মার্চ বেলা ১০টায় বগুড়ার নিশিন্দারা উপশহরের দুদকের বগুড়া কার্যালয়ে তলব করা হয়েছে। রবিবার দুপুরে লোক মারফত এ সংক্রান্ত নোটিশ তার কাছে পাঠানো হয়। অনেক খুঁজে বিকালে তাকে পাওয়া গেলেও প্রথমে নোটিশ নিতে রাজি হননি। পরে নোটিশ নিয়েছেন।
দুদক কর্মকর্তা আরও জানান, ওইদিন এমপি বাবলু হাজির হলে তার ও পরিবারের সদস্যদের সম্পদের হিসাব চাওয়া হবে।
সংসদ সদস্য বাবলুর ফোন বন্ধ থাকায় এ বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।