লর্ড লিটন সেতু ফিরবে আগের চেহারায়

নওগাঁ শহরকে দুই ভাগে ভাগ করেছে এক সময়ের খরস্রোতা ছোট যমুনা নদী। তবে সেই বিভাজন দূর করে পূর্ব ও পশ্চিম নওগাঁকে এক করে রেখেছে এই নদীর ওপর নির্মিত লর্ড লিটন সেতুটি। ব্রিটিশ আমলে নির্মিত সেতুটিতে এরইমধ্যে কিছু ফাটল ধরায় মেরামত দরকার হয়ে পড়েছিল খুব। অবশেষে দীর্ঘ সময় পর ঐতিহ্যবাহী এই সেতুর সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে।

সঠিকভাবে এ কাজ শেষ হলে সেতুটি ফের আরও ৩০-৪০ বছরের জন্য ব্যবহার উপযোগী হয়ে উঠবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

নওগাঁ সড়ক ও জনপদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ব্রিটিশ শাসন আমলে নওগাঁর পূর্ব ও পশ্চিম অংশকে সংযোগ করার জন্য তৎকালীন লর্ড লিটন ছোট যমুনা নদীর ওপর এই সেতুটি নির্মাণ করেছিলেন। তাই তার নাম অনুসারে এই সেতুটির নামকরণ করা হয়। দীর্ঘদিন সেবা দেওয়ার পর সেতুটির ভগ্নদশার সৃষ্টি হলে ১৯৮৪ সালে সেতুটিকে মেরামত করে আবারও চলাচল উপযোগী করা হয়েছিল। এরপর আর মেরামত না করায় সেতুটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।

স্থানীয়রা জানান, গত এক দশকে এই সেতুর অনেক জায়গায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছিল। ফলে সেই গর্তগুলোতে যেনতেনভাবে  অসমান উঁচু-নিচু করে জোড়াতালি দেওয়া হয়। এ কারণে সেতুর পুরো অংশ ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছিল না। তাই এর ওপর অধিকাংশ সময় প্রচণ্ড যানজটের সৃষ্টি হতো। এ অবস্থায় স্থানীয় মানুষের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সেতুটির স্থায়িত্ব বাড়াতে প্রকল্প হাতে নেয় নওগাঁ সওজ বিভাগ। সরকার সেই প্রকল্পটি অনুমোদন দিয়ে অর্থ বরাদ্দ দেওয়াই সেতুটির মেরামত কাজ শুরু হয়েছে।

নওগাঁ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার সাজেদুর রহমান সাজিদ বলেন, লিটন সেতুটি নওগাঁর একটি ঐতিহ্য। কিন্তু দীর্ঘ সময় সেতুটিতে কোনও মেরামতের কাজ না করায় এটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছিল। সেতুটি নওগাঁর জন্য অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় সওজের পক্ষ থেকে প্রকল্প গ্রহণ করা হয় এবং সরকার সংস্কার কাজের জন্য এই প্রকল্পে ৪৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এরইমধ্যে সেতুর মেরামত কাজ শুরু হয়েছে। আমরা আশা করছি, সেতুর পুরো সংস্কার কাজ শেষ হয়ে গেলে শহরবাসীর মুখে হাসি ফুটবে। সেতুটি আগের চেহারায় ফিরবে এবং এর ওপর আর যানজট সৃষ্টি হবে না।