রাবির প্রশাসন ও সিনেট ভবনে দ্বিতীয় দিনেও ঝুলছে তালা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সিনেট এবং দুটি প্রশাসন ভবনে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো তালা ঝুলছে। রবিবার (২ মে) ফাইন্যান্স কমিটির মিটিং বন্ধ রাখতে উপাচার্যের বাসভবনে তালা দেন শাখা ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরা। মিটিং স্থগিত ঘোষণার পর ওই দিন দুপুর একটার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের তালা খুলে দেয় আন্দোলনকারীরা। তবে উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত সব ধরনের দাফতরিক কার্যক্রম বন্ধ রাখতে প্রশাসন এবং সিনেট ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

ছাত্রলীগ নেতারা বলছেন, ইউজিসির তদন্ত প্রতিবেদনে উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের দুর্নীতি স্পষ্ট। উপাচার্য শেষ সময়ে বড় ধরনের অনিয়ম করতে পারে বলে তারা জানতে পেরেছেন। মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি যাতে প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা না করতে পারেন, সে জন্য তালা ঝোলানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, আগামী ৬ মে অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের উপাচর্যের দ্বিতীয় মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে।

সোমবার (৩ মে) দুপুর দুইটার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসনিক ভবনের গেটে একটি তালা ঝোলানো। পাশে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্য শাহাদাত জানান, সকাল থেকে তিনি এখানে ডিউটি পালন করছেন। কেউ প্রশাসন ভবনে প্রবেশ করেনি।

রাবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ৬ মে পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।

চাকরি স্থায়ীকরণের দাবি
এদিকে চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো উপাচার্যের বাসভবনে সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টাররোলের কর্মচারীরা। সোমবার (৩ মে) সকাল ১০টা থেকে তারা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

মাস্টাররোল কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, সেনাশাসিত সরকারের পক্ষ থেকে মাস্টাররোল কর্মচারীদেরকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশনা থাকলেও উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান তার দুই মেয়াদে সেটি পালন করেনি। তিনি বিভিন্ন সময় অ্যাডহক ও স্থায়ী নিয়োগ দিয়েছেন। অথচ আমাদের চাকরি স্থায়ী করেননি।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি উপাচার্য ফের অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আমাদের দাবি স্পষ্ট, মাস্টারোল কর্মচারীদের চাকরি স্থায়ীকরণের আগপর্যন্ত কোনও নিয়োগ দেওয়া যাবে না।’ এসময় দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিনি ।

কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টাররোলে কর্মরত বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫৪৪ জনকে মাস্টাররোলে নিয়োগ দেওয়া হয়। বর্তমানে মাস্টাররোল কর্মচারীদের সংখ্যা ২৫০। বিভিন্ন সময় কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হলেও মাস্টাররোল কর্মচারীদের চাকরি স্থায়ী করা হয়নি।

জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, লকডাউনের কারণে আমাদের প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। আমরা বাসাতেই অবস্থান করছি। আন্দোলনকারীদের তালা ঝোলানোর বিষয়টি অবগত নন, বলে দাবি করেন তিনি।