করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিকে আমবাগান থেকে স্ত্রীসহ উদ্ধার করলো পুলিশ

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিপদেই পড়েছিলেন অটো মেকানিক সোহরাব আলী (৩৫)। ভাড়া বাসা ছেড়ে যান নিজ বাড়িতে। কিন্তু করোনা আক্রান্ত হওয়ায় মা-বাবাও তাকে বাড়িতে উঠতে দেননি। বাধ্য হয়ে নিজ বাড়ির পাশে আমবাগানের খোলা জায়গায় টিনের ঘরে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে থাকা শুরু করেন এ অটো মেকানিক।

এরপর কল দেন জাতীয় জরুরি সেবায়; ৯৯৯ নম্বরে। কল পেয়ে দুর্গাপুর থানা পুলিশ আম বাগান থেকে উদ্ধার করে সোহরাবের বাবার বাড়িতে একটি কক্ষে তাদের হোম কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করে দেয়।

rajshai2

এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতেখায়ের আলম বলেন, বৃহস্পতিবার ৯৯৯ হটলাইনে ফোন পেয়ে সেখানে পুলিশ ফোর্স পাঠিয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সোহরাব আলীকে স্ত্রীসহ উদ্ধার করে তার বাবার বাড়িতে হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করা হয়েছে। তার শরীর কিছুটা সুস্থ রয়েছে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করছেন। এমনকি সার্বক্ষণিক তাদের খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। এছাড়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুই সপ্তাহের শুকনো খাবার দেওয়া হয় তাদের।

দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাশমত আলী বলেন, মহামারির এ সময় এমন অমানবিক ঘটনা যেন কোথাও না ঘটে সে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হচ্ছে। এছাড়া সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে ও স্বাস্থ্যবিধি মানাতে এবং সবাইকে সচেতন করতে মাঠে কাজ করছে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনী।

rajshai3

দুর্গাপুর উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মানিক আলী বলেন, করোনা হওয়ার পর সোহরাব আলী ভাড়া বাড়ি ছেড়ে গ্রামের মধ্যে বাবা খয়বর আলীর বাড়িতে থাকার জন্য যান। কিন্তু বাবা খয়বর আলী, সোহরাবের মা ও তার প্রথম স্ত্রী তাদের বাড়িতে জায়গা দেননি। বাধ্য হয়ে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ির পাশের একটি আমবাগানে টিনের ছাপরা ঘরের নিচে মাথা গোঁজার ঠাঁই হয় তাদের। দুইদিন অতিবাহিত হওয়ার পর ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে থানা পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং সোহরাব আলীকে স্ত্রীসহ উদ্ধার করে বাবা খয়বর আলীর বাড়ির একটি কক্ষে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখার ব্যবস্থা করেন। এছাড়া বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হলে সেখান থেকে কিছু খাদ্যসামগ্রী সহায়তা দেওয়া হয় সোহরাব আলীকে।