রাজশাহীতে প্রতিদিন আইসিইউর অপেক্ষায় ৫০ রোগী 

রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। তবে রোগীর মৃত্যুতেও হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) ফাঁকা হচ্ছে না। প্রতিদিন ৫০-৬০ জন রোগী আইসিইউর অপেক্ষায় থাকেন।

রামেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, আইসিইউ না পাওয়ায় হাসপাতালে বেশি রোগীর মৃত্যু হচ্ছে। সময়মতো আইসিইউর ব্যবস্থা করা গেলে রোগীদের বাঁচানো সম্ভব হতো। আবার রোগীদের ফুসফুস বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর হাসপাতালে ভর্তি করায় তাদের সুস্থ করে তোলা সম্ভব হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে হাসপাতালের আইসিইউ শয্যা বাড়ানোর কথা বলছেন করোনা আক্রান্ত রোগী ও তাদের স্বজনরা। কারণ রাজশাহীতে আইসিইউ পাওয়া এখন দুঃসাধ্য।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, রাজশাহী মেডিক্যালে করোনা সংক্রমণের আগে মোট ২০টি আইসিইউ ছিল। বর্তমানে ৩০টি আইসিইউ রয়েছে। এর মধ্যে করোনা রোগীদের জন্য ২০টি আইসিইউ বরাদ্দ রয়েছে। বাকি ১০টি অন্যান্য রোগীদের জন্য ব্যবহার হচ্ছে। করোনা রোগীদের ২০টি আইসিইউর সব কটিই রোগীতে পূর্ণ। এগুলোর বিপরীতে রোগী থাকেন ৫০-৬০ জন। এজন্য আইসিইউ ফাঁকা পাওয়া যাচ্ছে না।

রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, যেসব রোগীর হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলার প্রয়োজন পড়ে, তাদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা খুবই কম। প্রায় ৫০ শতাংশের বেশি মারা যায়। হাসপাতালে বর্তমানে রোগীর চাহিদার তুলনায় আইসিইউ সংখ্যা খুবই কম। তবে আইসিইউ শয্যা বাড়ানোর চেষ্টা করছি আমরা।

করোনা রোগীদের ২০টি আইসিইউর সব কটিই রোগীতে পূর্ণ

তিনি আরও বলেন, আইসিইউ চাহিদা বাড়তে থাকায় হাসপাতালের আইসিইউ বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে। কিন্তু বাড়ানোর জন্য অবকাঠামো নেই। সেটি তৈরি করে আইসিইউ বাড়ানো হবে। এছাড়া সদর হাসপাতালেও আইসিইউ শয্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে হয়তো কাজ শুরু হবে। বর্তমানে হাসপাতালে আইসিইউ খালি হলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যে রোগীর অবস্থা খুবই খারাপ থাকে, তাকে দেওয়া হয়।

শামীম ইয়াজদানী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭১ জন। একই সময়ে সুস্থ্ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৪৪ জন। শনিবার সকাল পর্যন্ত হাসপাতালে ৪০৫ শয্যার বিপরীতে চিকিৎসাধীন আছেন ৪৭৮ জন। আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ২০ জন। হাসপাতাল ১২০০ শয্যার। কিন্তু রোগী ভর্তি থাকেন দ্বিগুণের বেশি। অনেক রোগী শয্যা না পেয়ে বারন্দায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এদিকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (২ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে শনিবার (৩ জুলাই) সকাল ৮টার মধ্যে তাদের মৃত্যু হয়। মৃতদের মধ্যে পাঁচ জন করোনা আক্রান্ত ছিলেন। বাকিরা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। শুক্রবার রাতে দুটি ল্যাবে রাজশাহী জেলার ৩৭৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১০০ জনের করোনা শনাক্ত হয়, যা আগের দিনের চেয়ে ১৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ কম। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্তের হার ২৬ দশমিক ৭৪ শতাংশ। এর আগের দিন বৃহস্পতিবার শনাক্তের হার ছিল ৪২ দশমিক ৪০ শতাংশ।