পানিতে ডুবেছে উপহারের ঘর!

বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকীতে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার মানিকদিপা পলিপাড়া এলাকায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরগুলো এখন পানিতে ডুবে আছে। নিচু জমিতে ঘরগুলো নির্মাণ করায় সামান্য বৃষ্টিতেই সেগুলো তলিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় ৯টি পরিবারের সদস্যরা ঘরে রাত্রিযাপন, টয়লেট ব্যবহার ও রান্নার কাজ করতে পারছেন না। কলাগাছের ভেলায় তাদের যাতায়াত করতে হচ্ছে। সাপ-বিচ্ছুর ভয়ে নির্ঘুম রাত কাটছে তাদের। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কাবিটা প্রকল্পের অর্থায়নে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর অধীন প্রথম পর্যায়ে শাজাহানপুর উপজেলার মানিকদিপা পলিপাড়া এলাকায় খাসজমিতে গৃহহীনদের জন্য ৯টি ঘর নির্মাণ করা হয়। এতে ব্যয় হয়েছে ১৫ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। গত ২৩ জানুয়ারি গৃহহীনদের মাঝে ঘরগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে। 

তবে রাস্তা থেকে নিচু এলাকায় নির্মাণ করায় সামান্য বৃষ্টির পানিতেই ঘরগুলো ডুবে যাচ্ছে। এতে উপকারভোগীদের ভোগান্তি কমার চেয়ে বরং বেড়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই সৃষ্ট জলাবদ্ধতার কারণে কলাগাছের ভেলায় বা ছোট ডিঙি নৌকায় করে তাদের ঘরে যেতে হয়। নিচে পানি থাকায় তারা ঘরে বিছানার ওপর বসে থাকেন। পানিতে ডুবে থাকায় ব্যবহার করতে পারছেন না টয়লেট ও রান্না ঘর।

উপকারভোগী হযরত আলী ও আয়েশা বেগম বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের থাকার জন্য ঘর দিয়েছেন। কিন্তু নিচুস্থানে ঘর নির্মাণ করায় সামান্য বৃষ্টিতেই ঘরে পানি উঠে যায়। সৃষ্টি হয়  জলাবদ্ধতার। ঘরে পানি উঠে যাওয়ায় সাপ ও অন্যান্য পোকামাকড়ের ভয়ে রাতে ঘুমাতে পারছি না। অনেক সময় রাত জেগে লাঠিহাতে বসে থাকতে হচ্ছে। টয়লেট ও রান্নাঘরও ব্যবহার করতে পারছি না।

কয়েকজন অভিযোগ করেন, প্রকল্পের সভাপতি শাজাহানপুর উপজেলার সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা পারভীন ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আবদুল জব্বারের অদুরদর্শিতার কারণেই তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। শুরুতেই তারা ওই নিচু জমিতে ঘর তুলতে আপত্তি জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাদের সে দাবি অগ্রাহ্য করা হয়েছে। এছাড়া ঘর নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারেরও অভিযোগ করেন তারা।

তবে পিআইও’র দাবি, জমি নিচু হওয়ায় নকশার চেয়েও তিন ফুট উঁচু করে ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। 

এ প্রসঙ্গে শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসিফ আহমেদ জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় প্রকল্প এলাকায় বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পানি নিষ্কাশনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও
প্রকৌশলীদের সঙ্গে কথা বলে স্থায়ী সমাধান করা হবে। এছাড়া সুবিধাভোগীদের খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।