ছাত্রীদের অনলাইন ক্লাসে ঢুকে ‘নাগিন ড্যান্স’

বগুড়ার বিয়াম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীদের অনলাইন ক্লাসে নাচ ও আপত্তিকর ছবি দেখানোর অভিযোগ উঠেছে। গত ২০ সেপ্টেম্বর (সোমবার) ক্লাসে এ ঘটনায় ঘটলেও শিক্ষক সাকিব হাসান বিষয়টি অধ্যক্ষকে অবহিত কিংবা আইনের আশ্রয়ও নেননি। এতে শুধু ওই ক্লাসে থাকা ৩৫ জন ছাত্রী নয়, অভিভাবকরাও বিব্রত ও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এরপর থেকে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে অংশ নিতে সাহস পাচ্ছে না। 

তারা বলছেন, এমন অনভিজ্ঞ শিক্ষক দিয়ে জুমে ক্লাস করানো ঠিক হয়নি।

শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকালে এ বিষয়ে জানতে শিক্ষক সাকিব হাসানের মোবাইল নম্বরে কল করা হলেও তিনি ধরেননি। তবে অধ্যক্ষ মুহা. মুস্তাফিজার রহমান জানান, সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে তিনি জেনেছেন, কে বা কারা অল্প সময়ের জন্য ঢুকে শুধু গান বাজিয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে তাকে ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলেও তিনি জানান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বগুড়া বিয়াম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের কয়েকজন অভিভাবক জানান, গত ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় সপ্তম শ্রেণির ‘চ’ শাখার অনলাইন ক্লাসে ৩৫ জন ছাত্রী ছিল। অ্যাডমিন ছিলেন, স্কুলের গণিত বিভাগের শিক্ষক সাকিব হাসান। ক্লাস শুরুর পরপরই অজ্ঞাত কেউ ক্লাসে ঢুকে পড়ে। প্রথমে ‘নাগিন নাচ’ এরপর দুই বার আপত্তিকর ছবি দেখায়। এ সময় ছাত্রী ও পাশে থাকা বাবা-মা বিব্রত হয়ে ক্লাস থেকে বের হয়ে যায়। ছাত্রীরা চিৎকার করে শিক্ষক সাকিব হাসানের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি ওই অজ্ঞাতকে ব্লক করে দেন।

এর আগে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘পারলে আমায় ধরেন।’

এক ছাত্রীর মা জানান, তার মেয়ে জুমে গণিত ক্লাস করার সময় তিনি পাশে ছিলেন। স্কুলের ওই শিক্ষকের আইটি সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকা উচিত। শিক্ষার্থীরা অনলাইন ক্লাসে প্রবেশ করলে তাদের নাম ও রোল দেখায়। অথচ অন্য ব্যক্তি কীভাবে ঢুকে অশ্লীল ছবি দিলো তা নিয়ে অভিভাবকরা লজ্জিত, চিন্তিত ও বিব্রত। তারা মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে আতঙ্কিত।

অভিভাবকরা দাবি করেন, অনলাইনে ক্লাস চলাকালে মাঝে মাঝেই কে বা কারা ঢুকে পড়ে। তারা ছাত্রীদের ‘লাভ ইউ’ ছাড়াও বিভিন্ন অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করে থাকে। এমন ঘটনা ঘটলেও হ্যাকারকে শনাক্ত বা গ্রেফতারে স্কুলের পক্ষ থেকে থানায় জানানো হয়নি। এমন ঘটনা ঘটলে সন্তানদের অনলাইন ক্লাসে পাঠাবেন না। তারা এ বিষয়ে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

বগুড়া বিয়াম ম‌ডেল স্কুল অ‌্যান্ড ক‌লে‌জের ঘটনা প্রস‌ঙ্গে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হযরত আলী জানান, এমন ঘটনা খুবই দুঃখজনক। এ বিষয়ে রবিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) প্রতিষ্ঠান প্রধা‌নের সঙ্গে তিনি কথা বল‌বেন। এখা‌নে কা‌রও গা‌ফিল‌তি পে‌লে তদন্তপূর্বক ব‌্যবস্থা নেওয়া হ‌বে।