সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে রাবিতে প্রতিরোধ সমাবেশ

হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিমা-উপাসনালয় ভাঙচুর, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোট। রবিবার (২৪ অক্টোবর) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে আয়োজিত প্রতিরোধ সমাবেশে তারা এ প্রতিবাদ জানায়।

কর্মসূচিতে ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত নাট্যজন অধ্যাপক মলয় ভৌমিক বলেন, একবিংশ শতাব্দীতে আমরা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক জীবনে এক ভিন্ন উপসর্গ লক্ষ্য করছি। আমরা বলছি এগোচ্ছি, কিন্তু না। এখনও ভারত উপমহাদেশসহ বিশ্বের উন্নত দেশে  ধর্ম, বর্ণ, জাতি, আঞ্চলিকতা এসব বিষয়কে উসকে দিয়ে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, আমাদের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা তরুণ যুবসমাজকে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারছি না। সম্প্রতি যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, তাতে শুধু স্থানীয়ভাবে যারা জড়িত তাদের হাতই নেই। এর সঙ্গে সম্পৃক্ত আন্তর্জাতিক ব্যবসা বাণিজ্য, ভূ-রাজনৈতিক অবস্থা। এই জায়গাগুলোতে যদি আমরা উন্নতি করতে না পারি তাহলে এমন ঘটনা বারবার ঘটতেই থাকবে।

মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক শাহ আজম শান্তনু বলেন, ১৯৭১ সালে যে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি তার মূলভিত্তি ছিল সাম্প্রদায়িকতাকে নির্মূল করে অসাম্প্রদায়িক চেতনার একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। জাতির পিতা এই আদর্শকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মূল ভিত্তি হিসেবে চিন্তা করেই গোটা দেশকে ঐক্যবদ্ধ করতে পেরেছেন। আমরা দেখেছিলাম সব সম্প্রদায়, শ্রেণিপেশার মানুষ, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, শিক্ষক এমনকি কামার-কুমার কেউই কিন্তু পিছিয়ে ছিলেন না অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায়। কিন্তু আজ স্বাধীনতার ৫০ বছর পর আমাদের যখন আবার সেই সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হয়, সত্যিই লজ্জা লাগে। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি আমরা।
  
বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট রাবি শাখার সাবেক সহ-সভাপতি আজম খানের সঞ্চলানায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দর্শন বিভাগের অধ্যাপক এস এম আবু বকর, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক অমিত কুমার দত্ত, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতা আমানুল্লাহ আমান প্রমুখ। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতি জোটের সভাপতি মহিউদ্দীন মানিক। কর্মসূচিতে প্রায় ৩০ জন সাংস্কৃতিক কর্মী উপস্থিত ছিলেন।