এক উপজেলায় আ.লীগের ১৯ বিদ্রোহী প্রার্থী

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার ১১ ইউনিয়নে আসন্ন নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ১৯ জন বিদ্রোহী প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছেন। এতে নেতাকর্মীরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন। নেতৃবৃন্দ নির্বাচনি ফলাফল নিয়ে চিন্তিত রয়েছেন। তারা আশা করছেন, বিদ্রোহীরা দলের স্বার্থে নির্দিষ্ট সময়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করবেন। এ ব্যাপারে তারা কেন্দ্রের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দ্বিতীয় ধাপের এ নির্বাচনে ১১ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ থেকে চেয়ারম্যান পদে ১১ জনকে নৌকা প্রতীক দেওয়া হয়েছে। তবে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের ১৯ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মনোনয়ন জমা দিয়ে বিদ্রোহী হয়েছেন।

ময়দানহাট্টা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন দুস্থদের চাল চুরি করে বরখাস্ত হওয়া এসএম রূপম। এখানে বিদ্রোহী হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা মেজবাউল আলম, আব্দুস সামাদ, যুবলীগ নেতা খন্দকার মাহবুব মোর্শেদ, যুব মহিলা লীগ নেত্রী শাহানা খাতুন এবং যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা আবু জাফর।

কিচক ইউনিয়নে মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান এবিএম নাজমুল কাদির চৌধুরী। এখানে বিদ্রোহী হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা শাহজাহান আলী ও যুবলীগ নেতা মোমিনুল ইসলাম চৌধুরী লিটন। আটমূল ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন, মিজানুর রহমান মিজান। বিদ্রোহী হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা বেলাল হোসেন। পীরব ইউনিয়ন দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন আব্দুল করিম। এখানে বিদ্রোহী হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা মোজাম্মেল হক মণ্ডল এবং প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা মকবুল হোসেনের ছেলে আসিফ মাহমুদ মিল্টন ও তার স্ত্রী শামিমা আকতার।  

বুড়িগঞ্জ ইউনিয়নে মনোনয়ন পেয়েছেন রেজাউল করিম চঞ্চল। বিদ্রোহী হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা সাইদুর রহমান।  শিবগঞ্জ সদর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন শহিদুল ইসলাম শহীদ। এখানে বিদ্রোহী হয়েছেন রাকিব আকন্দ নামে একজন। বিহার ইউনিয়নে মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম। তার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা মোনায়েম হোসেন ইকবাল ও যুবলীগ নেতা মতিউর রহমান মতিন। রায়নগর ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন শাহজাহান কাজী। তার বিরুদ্ধে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন যুবলীগ নেতা তাজুল ইসলাম।

সৈয়দপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন মাহাতাব উদ্দিন। এখানে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন ছাত্রলীগ নেতা ছানোয়ারুল ইসলাম। এ ছাড়া দেউলী ইউনিয়নে মনোনয়ন পেয়েছেন জাহেদুল ইসলাম। এখানে বিদ্রোহী হয়েছেন যুবলীগ নেতা বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল হাই প্রধান ও যুবলীগ নেতা সাজ্জাদ হোসেন সরকার টুটুল।

পীরব ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুল করিম জানান, তার সঙ্গে দুজন বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। তাদের বিষয়টি দলীয় নেতাদের অবগত করা হয়েছে।

বিদ্রোহী প্রার্থীদের প্রসঙ্গে শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান মোস্তা জানান, দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যারা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করবেন, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, আগামী ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হতে যাচ্ছে। ১১ ইউনিয়নে ১৭ অক্টোবর ছিল মনোয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৬ অক্টোবর এবং পরদিন প্রতীক বরাদ্দ করা হবে।