দেশের ‘সবচেয়ে ছোট গরু’ মাফিন

এবার রাজশাহীতে পাওয়া গেলো আরও একটি খর্বাকৃতির গরু। আশুলিয়ার রানি এবং গাজীপুরের টুনটুনির পর ‘মাফিন’ নামের খর্বাকৃতির গরুটির সন্ধান মিললো।

মাফিনের উচ্চতা সাড়ে ২৩ ইঞ্চি। ওজন ১৮ কেজি। গরুর মালিক মো. ইয়াসির আরাফাত রুবেল। তার বাড়ি রাজশাহীর রামচন্দ্রপুর এলাকায়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলায় পড়াশোনা করা আরাফাত রুবেল অন্যান্য ব্যবসার পাশাপাশি গরুর খামারি। তার খামারের নাম ‘সওদাগর অ্যাগ্রো’।

মালিকের দাবি, গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান পাওয়া বিশ্বের সবচেয়ে খর্বাকৃতির গরু ছিল রানি। তার মৃত্যুর পর দেশের ‘সবচেয়ে ছোট গরু’ মাফিন।

মাফিনের উচ্চতা সাড়ে ২৩ ইঞ্চি

সম্প্রতি বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গরু হিসেবে আলোচিত ছিল ‘রানি’। মারা যাওয়ার পর সবচেয়ে ছোট গরু হিসেবে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম উঠেছিল তার। রানির উচ্চতা ছিল ২০ ইঞ্চি। লম্বায় ২৭ ইঞ্চি, ওজন ২৬ কেজি। রানি বেঁচে নেই। আরাফাত রুবেলের দাবি, উচ্চতা ও ওজন হিসেবে এখন ‘সবচেয়ে ছোট গরু’ মাফিন।

রুবেল জানিয়েছেন, রানি মারা যাওয়ার পর তিনি এ ধরনের গরু খুঁজছিলেন। সপ্তাহখানেক আগে জুয়েল রানা নামের এক ব্যক্তি সাতক্ষীরার কলারোয়া থেকে গরুটি তাকে এনে দিয়েছেন। তিনি ভালোবেসে গরুটির নাম রেখেছেন মাফিন। বয়স দুই বছরের বেশি। দুটি দাঁত উঠেছে।

আরাফাত রুবেলের দাবি, উচ্চতা ও ওজন হিসেবে এখন ‘সবচেয়ে ছোট গরু’ মাফিন

রুবেলের ভাষ্যমতে, গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের তথ্য অনুসারে ২০১৫ সালে ভারতের কেরালা রাজ্যে পাওয়া ‘মানিক্যাম’ নামের গরুটির উচ্চতা ছিল ২৪ ইঞ্চি। সেটির ওজন ছিল ৪০ কেজি। সেটি পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট গরু হিসেবে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্বীকৃতি পেয়েছিল। তারপরই গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম উঠেছিল রানির। রানির ওজন ছিল ২৬ কেজি। রানির মৃত্যুর পর গাজীপুরের শ্রীপুরে ‘টুনটুনি’ নামের ২৪ ইঞ্চির একটি গরু পাওয়া গেছে। এর ওজন ২২ কেজি, লম্বায় ৩৩ ইঞ্চি। তবে টুনটুনি প্রাপ্তবয়স্ক নয়, তার বয়স ১৪ মাস। দাঁতও ওঠেনি। ফলে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগে তার উচ্চতা বৃদ্ধির সম্ভাবনা আছে। সে হিসেবে মাফিন সবচেয়ে ছোট গরু। 

তিনি বলেন, গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম উঠতে গরুটিকে প্রাপ্তবয়স্ক হতে হবে। আমার গরুটি প্রাপ্তবয়স্ক। তাই সবচেয়ে ছোট গরুর স্বীকৃতি দিতে যথাযথ প্রক্রিয়ায় গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করবো।

ভালোবেসে গরুটির নাম রেখেছেন মাফিন

গরুটি বিক্রির পরিকল্পনা নেই উল্লেখ করে আরাফাত রুবেল বলেন, যদি রাজশাহীর শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ গরুটি চায়, আমি বিনা পয়সায় দেবো। সেটি চিড়িয়াখানায় সবাই দেখবে। শুধু দাতা হিসেবে আমার নাম থাকবে, এটাই প্রাপ্তি।

শনিবার (০৬ নভেম্বর) সকালে মাফিনকে দেখে এসেছেন রাজশাহী মহানগর প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের (বোয়ালিয়া) উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ফজলে রাব্বী। তিনি বলেন, মাফিন পুরোপুরি সুস্থ আছে। দুই বছরের বেশি তার বয়স। দুটি দাঁতও উঠেছে। জিনগত কারণে গরুটি ছোট আকৃতির হতে পারে। তবে এই গরুর চেয়ে ছোট গরু আছে কিনা আমি নিশ্চিত নই।

এদিকে, মাফিনকে দেখতে আরাফাত রুবেলের বাসায় ভিড় জমাচ্ছেন লোকজন। অনেকে গরুটির সঙ্গে সেলফি তুলছেন। ভিড় জমাচ্ছেন সৌখিন খামারিরাও। মাফিনকে পেতে লাখ টাকা দাম হাঁকছেন কেউ কেউ।