বরখাস্ত মেয়র আব্বাসের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ আরও ২ মামলা

কাটাখালী পৌরসভার বরখাস্ত মেয়র আব্বাস আলীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরও দুটি মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে কাটখালী থানায় মামলাগুলো করা হয়। এ নিয়ে বরখাস্ত হওয়া মেয়র আব্বাসের বিরুদ্ধে মোট তিনটি মামলা হলো।

কাটাখালী থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হরিয়ান ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কুদ্দুস বাদী হয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলা করেন। অপর মামলাটি করেছেন কাটাখালী পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক জনি ইসলাম জনি। তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আব্বাসের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় মামলাটি করেন।

আব্দুল কুদ্দুস তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, ২০১৯ সালের মার্চ মাসে কাটাখালী অটো স্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় আব্বাস আলীর বাসভবনের কাছে নিজ জায়গায় একটি মার্কেট নির্মাণ শুরু করেন। নির্মাণ কাজ শুরুর পরপরই আব্বাস তার কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দেওয়ায় আব্বাসের সশস্ত্র ক্যাডাররা তার নির্মাণ সামগ্রী ভাঙচুর করেন। ফলে এরপর তিনি আর মার্কেট নির্মাণ করতে পারেননি। এরপরও চাঁদা পরিশোধের দাবি করে হুমকি দিয়ে আসছিলেন। নিজ জায়গায় মার্কেট নির্মাণ করতে না পারায় তিনি বিপুল আর্থিক ক্ষতিতে পড়েন।

দ্বিতীয় মামলার বাদী তার অভিযোগে বলেছেন, গত ২৩ নভেম্বর আব্বাসের ভাইরাল হওয়া অডিওতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকেই শুধু কটূক্তি করা হয়নি- রাজশাহীর মেয়র ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনকে উদ্দেশ করে অসম্মানজনক নানা কটূক্তি করা হয়েছে।
খায়রুজ্জামান লিটন জাতীয় চার নেতার অন্যতম ও বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামানের ছেলে ও রাজশাহীর সিটি মেয়র। তার সম্পর্কে খারাপ উক্তি করায় দলের ও ব্যক্তির অনেক সম্মানহানি হয়েছে।

কাটাখালী থানার ওসি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘দুটি এজাহার পেয়ে সেগুলো মামলা আকারে রেকর্ড করা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় কারাগারে থাকা আব্বাসকে এ দুই মামলায় নতুন করে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন জানানো হবে আদালতে।’

গত ২২ নভেম্বর রাতে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণকে কেন্দ্র করে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটূক্তি করেন কাটাখালীর বরখাস্ত মেয়র আব্বাস আলী। এই ঘটনায় ২৫ নভেম্বর নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও রাসিকের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মোমিন বাদী হয়ে বোয়ালিয়া থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন। গত ২ ডিসেম্বর রাজধানীর হোটেল ইশা খাঁ রাজমনি থেকে র‌্যাব সদস্যরা আব্বাসকে গ্রেফতার করে। এ ছাড়া গত ১০ ডিসেম্বর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় আব্বাসকে সাময়িক বরখাস্ত করে। জেলা আওয়ামী লীগ আগেই কাটাখালী পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করে। বর্তমানে আব্বাস রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।