২ পুলিশকে পেটানোর অভিযোগ যুবলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে

নাটোরে মোটরসাইকেলে ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে দুই পুলিশ সদস্যকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে যুবলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে। এতে এক পুলিশের মাথা ফেটে গেছে, অপরজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় যুবলীগের চার কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) দুপুরে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতাল সড়কের হেমাঙ্গিনী সেতুর কান্দিভিটা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন কনস্টেবল হাসিব উদ্দিন (২৪) ও সেলিম হোসেন (২৫)। তারা নাটোর পুলিশ লাইনসে কর্মরত। তাদের রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আটক যুবলীগ কর্মীরা হলেন, নাদিম, জনি, সাগর ও জাকির।

পুলিশ, স্থানীয় সূত্র ও আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন উপলক্ষে শহরের কান্দিভিটা এলাকার দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠান থেকে বেরিয়ে কয়েকজন যুবলীগ কর্মী মোটরসাইকেলে হাসপাতাল সড়ক দিয়ে যাচ্ছিলেন। অপরদিকে পুলিশ লাইনসে কর্মরত কনস্টেবল হাসিব ও সেলিম সাদা পোশাকে মোটরসাইকেল নিয়ে সদর হাসপাতালের দিকে যাচ্ছিলেন। হেমাঙ্গিনী সেতু অতিক্রমের সময় পাশের মোটরসাইকেলে ধাক্কা লাগে। এতে মোটরসাইকেলে থাকা জাকির ও সাগর তাদের ওপর ক্ষিপ্ত হন। এ নিয়ে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। 

একপর্যায়ে দুই পুলিশ সদস্যকে মারধর করেন তারা। তাদের সঙ্গে ছিলেন যুবলীগের আরও কয়েকজন কর্মী। এ সময় ইটের আঘাতে মাথা ফেটে যায় কনস্টেবল সেলিমের। সেই সঙ্গে হাসিবও আহত হন। আহত পুলিশ সদস্যদের নাটোর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

খবর পেয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা হাসপাতালে গিয়ে আহতদের চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেন। তাদের সঙ্গে কথা বলে ওই চার যুবলীগ কর্মীকে আটক করে পুলিশ। সেই সঙ্গে দুই পুলিশ সদস্যকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, কনস্টেবল হাসিব ও সেলিম জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে পুলিশ লাইনসে আয়োজিত মেলার স্টলের সাজসজ্জার জন্য ফুল ও বেলুন কিনতে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে এই ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা ইট দিয়ে দুই পুলিশ সদস্যের মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। কনস্টেবল সেলিমের মাথায় সাতটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। তাদের রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান বলেন, তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে ঘটনা যাই ঘটুক, তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।

নাটোর জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বিপ্লব বলেন, পুলিশ সদস্যের ওপর হামলাকারীরা যুবলীগের পদধারী নেতা নন। তবে তারা যুবলীগের কর্মী হিসেবে পরিচিত। তাদের আটক করেছে পুলিশ।

সদর থানার ওসি নাসিম বলেন, এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। ওই মামলায় আটক চার জনকে গ্রেফতার দেখানো হবে।