ভাই হত্যার প্রতিশোধ নিতে মেয়ে সেজে প্রেম, ডেকে এনে খুন

পাবনার বেড়ায় ফুটপাতের কাপড় ব্যবসায়ী ইমরান হোসেন হত্যার ঘটনায় দুই জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার (৩০ মার্চ) তাদেরকে আদালতে তোলা হলে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। বিচারকের কাছে হত্যার কারণ উল্লেখ করেছেন।

গ্রেফতার দুই আসামি হলেন- বেড়া উপজেলার স্যানালপাড়া আব্দুল মাজেদের ছেলে আজাদুর রহমান নবীন (২৪) ও একই এলাকার আব্দুল মালেক মোল্লার ছেলে আলাউদ্দিন (২০)।

এর আগে আসামি নবীন পুলিশকে জানিয়েছে, ভাই হত্যার প্রতিশোধ নিতে মেয়ে সেজে মোবাইল ফোনে প্রেম করে ডেকে এনে বেড়া বাজারের ফুটপাতে কাপড় বিক্রেতা ইমরানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছেন। নিহত যুবক একই এলাকার আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে।

পুলিশের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রবিবার (২৭ মার্চ) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বেড়া উপজেলার পৌর এলাকার আলহেরা নগরের একটি ঘাসের জমি থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা আব্দুল কুদ্দুস বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে থানায় একটি মামলা করেন।

পুলিশ মামলা দায়েরের পর হত্যার রহস্য উদঘাটনে তদন্তে নামে। বেড়া ও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় অভিযান চালিয়ে দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। এই হত্যা মামলার সঙ্গে জড়িত। তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক পুলিশ হত্যায় ব্যবহৃত দড়ি ও ছুরি উদ্ধার করে।

জিজ্ঞাসাবাদে আসামি নবীন থেকে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে ইমরানসহ আরও তিন জন তার ভাই আরাফাতকে অপহরণের পর হত্যা করে। সেই মামলায় ইমরান প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর যশোর কিশোর সংশোধনাগারে ছিল। প্রায় ৮/৯ মাস আগে বের হয়ে এসে বাদীদের নিয়ে নানা ধরনের মন্তব্যসূচক কথা বলে। এসব সহ্য করতে না পেরে ও ভাই হত্যার প্রতিশোধ নিতেই নবীন কৌশলে ইমরানের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে মেয়ে কণ্ঠে প্রায় তিন মাস প্রেমের অভিনয় করে। গত ২৫ মার্চ নবীন কক্সবাজার থেকে নারায়ণগঞ্জে এসে আসামি আলাউদ্দিনের সঙ্গে হত্যার পরিকল্পনা করে। ২৬ মার্চ রাত সাড়ে ১১টায় নবীন পরিকল্পনা অনুযায়ী ইমরানকে মেয়ে কণ্ঠে আলহেরা নগরে আসতে বলে। কথামতো ইমরান চিপস নিয়ে কথিত প্রেমিকার বাড়ির সামনে আসা মাত্রই জাপটে ধরে রাস্তার পাশে ঘাসের ক্ষেতে নিয়ে রশি দিয়ে বেঁধে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করার পর ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

বেড়া থানার ওসি অরবিন্দ সরকার জানান, বুধবার আসামিদের আদালতের সোপর্দ করা হয়। তারা বিচারকের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দোষ স্বীকার করেছে। আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।