শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কামরায় বসে ট্রেন চালাবেন চালকরা

এতদিন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) বগি নিয়ে নির্ধারিত গন্তব্যে রওনা দিতে হয়েছে ট্রেনচালকদের। এবার এসি কামরায় বসে ট্রেন চালাবেন তারা। গত ৩১ মার্চ থেকে শনিবার (২ এপ্রিল) তিনটি ইঞ্জিন রাজশাহী ও পাবনার ঈশ্বরদীর মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হয়।

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার আব্দুল করিম জানান, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা ৪০টি সর্বোচ্চ গতির ইঞ্জিন (লোকোমোটিভ) বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলে ট্রেনে যুক্ত হচ্ছে। এর মধ্যে চারটি ঈশ্বরদী লোকশেডে পৌঁছেছে। রবিবার (৩ এপ্রিল) এই চারটি ট্রেনের পরীক্ষামূলক চলাচল শেষ হবে। গত বৃহস্পতিবার প্রথম ইঞ্জিন চালান তৌহিদুল ইসলাম। তিনি ২০০৮ সাল থেকে লোকোমোটিভ মাস্টার হিসেবে পশ্চিম রেলে কর্মরত আছেন।

তৌহিদুল ইসলাম বলেন, এই ইঞ্জিনের সর্বোচ্চ গতিসীমা ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার। কিন্তু তাদের চালানোর জন্য আপাতত সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেধে দেওয়া হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাজশাহী থেকে ঈশ্বরদী পর্যন্ত তিনি সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৯৩ কিলোমিটার তুলেছিলেন। রাজশাহী থেকে আব্দুলপুর পর্যন্ত ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার, আর আব্দুলপুর থেকে আজিমনগর পর্যন্ত ঘণ্টায় ৯৩ কিলোমিটার গতিতে চালিয়েছেন। এর বেশি গতিতে চালানো যায় না।

তিনি জানান, ইঞ্জিনের আগে-পিছে ক্যামেরা লাগানো রয়েছে। তাই মনিটরের মাধ্যমে সামনে কী আছে দেখা যাবে। জিপিএসও লাগানো রয়েছে। এতে ট্রেনের অবস্থান অন্ধকারেও বোঝা যাবে।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা ৪০টি ইঞ্জিন বাংলাদেশ পশ্চিম রেলে যুক্ত হচ্ছে

তৌহিদুল ইসলাম বলেন, চালকদের জন্য এই প্রথম এসি কামরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। গরমে লোহা গরম হয়ে যায়। তখন গরম লাগে বেশি। আবার শীতে লোহা ঠান্ডা হয় বেশি। তখন ঠান্ডা লাগে। সব সময় শীত-গরমের কষ্টে ভুগতে হয়। যাত্রীরা এসিতে যেতে পারলেও চালকদের কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার বলেন, দেশে তিন হাজার ২০০ হর্সপাওয়ারের ইঞ্জিন ছিল। এবার তিন হাজার ৩০০ হর্সপাওয়ারের অত্যাধুনিক ৪০টি ইঞ্জিন পর্যায়ক্রমে পশ্চিম রেলে যুক্ত হবে।

রবিবার (৩ এপ্রিল) চারটি ইঞ্জিনের পরীক্ষামূলক চলাচল শেষ হবে। শুধু কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস ট্রেনের বগির সঙ্গে লাগিয়ে পরীক্ষামূলক চলাচলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ, দিনে ঈশ্বরদী ও রাজশাহীর মধ্যে চলাচলকারী একটি ট্রেনই রয়েছে। 

ইঞ্জিনগুলো চালানোর সময় বাইরের বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি সঙ্গে রয়েছেন। চালানোর সময় যেসব ত্রুটি বা অসংগতি পাওয়া যাবে, পরে সেগুলো ঠিক করে আনুষ্ঠানিকভাবে এগুলো চালানো হবে।