হত্যার পর লাশ মাটিচাপা: আ.লীগ নেতাসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

বগুড়ার ধুনট উপজেলায় আরিফুল ইসলাম হিটলু (৩৮) নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নবাব আলীসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। নিহতের স্ত্রী শেফালী খাতুন মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) ধুনট থানায় এই মামলা করেন। 

গত ১৭ এপ্রিল দুপুরে শাহজাহানপুর উপজেলার আমরুল ইউনিয়নের একটি পরিবারিক কবরস্থানে মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় হিটলুর লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি বেড়েরবাড়ি বুড়িভিটা গ্রামের আবদুল জলিলের ছেলে। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, জুয়া ও মাদকসহ মোট আটটি মামলা ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হিটলুর পেশা ছিল জুয়া খেলা ও মাদক ব্যবসা। ধুনট ও শাজাহানপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে জুয়া ও মাদকের ব্যবসা করে আসছিলেন। হিটলুর বিরুদ্ধে ধুনট থানায় মাদক, জুয়া ও মারধরসহ বিভিন্ন অপরাধে আটটি মামলা আছে। প্রতিবেশী আবদুল মালেক ছিলেন তার অংশীদার। মালেকের বিরুদ্ধেও দুটি মামলা রয়েছে। জুয়ার আসর বসানো ও মাদক ব্যবসার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে কিছুদিন ধরে হিটলু ও মালেকের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। তখন থেকে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই জনের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়। উভয়ে পৃথকভাবে লোকজন নিয়ে তাদের অপকর্ম চালিয়ে আসছিলেন। এর জের ধরে হিটলু ও তার লোকজন গত শবে বরাতের রাতে মালেক গ্রুপের লোকজন নিমগাছি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক নবাব আলীকে অপহরণের চেষ্টা করে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ আরও বাড়ে।

আরও পড়ুন: ৮ মামলার আসামিকে কুপিয়ে হত্যার পর লাশ মাটিচাপা

গত ১৬ এপ্রিল সন্ধ্যার দিকে হিটলু ও তার লোকজন আবদুল মালেককে কুপিয়ে জখম করেন। এতে আবদুল মালেক, নবাব আলী ও তার লোকজন প্রতিপক্ষ হিটলুর ওপর ক্ষুব্ধ হয়। তাদের শতাধিক লোকজন রাত ৯টার দিকে কৌশলে হিটলুকে বাড়ি থেকে ডেকে বাড়ির কাছে বেড়েরবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের পেছনে নিয়ে যায়। সেখানে হিটলুকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে শাজাহানপুর উপজেলা আমরুল ইউনিয়নের ক্ষুদ্র ফুলকোর্ট টাইরপাড়ায় পুরাতন কবরে মাটিচাপা দেওয়া হয় লাশ। তার একটি পা বাইরে ছিল। পরদিন দুপুরে পুলিশ সেখান থেকে হিটলুর লাশ উদ্ধার করে। 

ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা জানান, হিটলুর স্ত্রী শেফালী খাতুন থানায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা নবাব আলীসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা ও লাশ গুমের মামলা করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

অভিযোগ প্রসঙ্গে নবাব আলী জানান, জুয়াড়ি ও মাদক ব্যবসায়ী হিটলু এলাকার সন্ত্রাসী ছিল। তার অত্যাচারে জনগণ অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। 

তিনি দাবি করেন, এ হত্যাকাণ্ডে তার কোনও সম্পৃক্ততা নেই। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা তাকে হয়রানি ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতেই মামলায় আসামি করেছে।