ভাতা কার্ড দেওয়ার নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় এক নারীর বিরুদ্ধে অসহায়-দুস্থদের বিধবা, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীসহ বিভিন্ন ভাতা কার্ড দেওয়ার নামে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। টাকা ফেরত চাওয়ায় উল্টো মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। তারা এ ব্যাপারে প্রতিকার পেতে স্থানীয় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের বড়ইকান্দি গ্রামের টুকু তরফদারের স্ত্রী প্রভাবশালী শাহেদা বেগম দেড় বছর আগে গ্রামের বেশ কয়েকজন অসহায়কে ভাতা কার্ড করে দেওয়ার কথা বলেন। বিনিময়ে তিনি তাদের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেন। টাকা নেওয়ার পরও ভাতা কার্ড না দেওয়ার ভুক্তভোগীরা টাকা ফেরত চান। বাড়িতে গেলে তাদের সঙ্গে অসৌজন্য আচরণ করা হয়। এছাড়া তিনি গত ১১ এপ্রিল ১৪ জনের নামে আদালতে মামলা করেছেন।

দুস্থরা টাকাগুলো ফেরত ও প্রতিকার পেতে কুতুবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। 

ভুক্তভোগী সাইফুল ইসলাম জানান, ‘কার্ড দেওয়া সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সঙ্গে সম্পর্ক আছে বলে শাহেদা বেগম তার কাছে ছয় জনের ভাতা কার্ড দেওয়ার নামে ৭০ হাজার টাকা নিয়েছেন। এ ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের বিচারে তিনি হাজির হন না। বাড়িতে টাকার জন্য গেলে উল্টো তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছেন।’ 

নবিতন বেগম জানান, শাহেদা তার কাছ থেকে ১২ হাজার ৬০০ টাকা, ফুলেরার কাছ থেকে নয় হাজার ৫০০ টাকা, সুরুতজানের কাছে চার হাজার টাকাসহ এলাকার বেশ কয়েকজন নারীর কাছে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। কার্ড না দেওয়ায় তারা টাকা ফেরত চাইলে মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন। 

ফুলেরা বেগম জানান, ভাতা কার্ড পাওয়ার আশায় তিনি সুদের ওপর টাকা নিয়ে শাহেদাকে দিয়েছেন। এখন কার্ড ও টাকা কোনোটাই পাচ্ছেন না। এতে তার সংসারে অশাস্তি দেখা দিয়েছে।

অভিযোগ অস্বীকার করে শাহেদা বেগম বলেন, তিনি ভাতা কার্ড দেওয়ার নামে কারও কাছে টাকা নেননি। অথচ গ্রামের কিছু লোক বাড়িতে এসে গোয়ালের গরু নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়। তারা বাড়ি থেকে ইট নিয়ে গেছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দেওয়া হয়েছে।

কুতুবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম সুজন জানান, তিনি কয়েক দিন আগে শপথ নিয়েছেন। অর্থ আত্মসাতের অভিযোগটি আগের চেয়ারম্যানের সময়ের। তারপরও তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।

সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, অভিযুক্ত নারী কোনও সরকারি চাকরিভুক্ত নন; তাই তাকে ধরা খুব কঠিন। এরপরও অভিযোগটি তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।