একদিনের নোটিশে ভাঙা হলো নাটোর প্রেস ক্লাব ভবন

একদিনের নোটিশে ভাঙা হয়েছে নাটোর প্রেস ক্লাব ভবন। ১০ মে স্বাক্ষরিত উচ্ছেদ নোটিশ ১৪ মে বিকালে প্রেস ক্লাবে পাঠায় সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। নোটিশে ভবন উচ্ছেদের তারিখ দেওয়া হয় ১৬ মে। এদিকে সময় বাড়ানোর আবেদনেও সাড়া দেয়নি কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা।

সোমবার (১৬ মে) নাটোর প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বাপ্পী লাহিড়ী বলেন, ‘প্রেস ক্লাব ভবনের জায়গাটি আরএস রেকর্ড অনুযায়ী নাটোর পৌরসভার সম্পত্তি। ২০০৭ সালে পৌরসভার সঙ্গে বাৎসরিক ভাড়ার চুক্তিনামায় নিজস্ব অর্থায়নে ভবনটি নির্মাণ করে নাটোর প্রেস ক্লাব। ২০১৯ সালে জায়গাটি নিজেদের দাবি করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ পৌরসভাকে বিবাদী করে মামলা করে। মামলাটি এখনও চলমান। এই অবস্থায় ১৪ মে বিকালে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে উচ্ছেদ নোটিশ দেওয়া হয়। সময় বাড়ানোর আবেদনে সাড়া না দিয়ে সোমবার ভবনটি ভাঙা হয়েছে। এতে বেশকিছু মূল্যবান আসবাবপত্র ও বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ থেকে আমরা বঞ্চিত হয়েছি। এসব সামগ্রী ছাড়াও আধুনিক ভবন ভেঙে আমাদের কমপক্ষে ৪০ লাখ টাকার ক্ষতি করা হয়েছে।’

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে নাটোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহিম জানান, ৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে শহরের বড় হরিশপুর বাইপাস থেকে বনবেলঘড়িয়া বাইপাস পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণ কাজ শুরু হয়। এরমধ্যে শহরের জিরো পয়েন্টের উভয় পাশে প্রায় ৭০০ ফুট দৈর্ঘ্যের সড়ক ১০০ ফুট প্রশস্ত করা হবে। এ জন্য জমি অধিগ্রহণ কার্যক্রমে অর্থ পরিশোধে সাড়ে ২৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এরই অংশ হিসেবে অর্থ পরিশোধ করা জমিতে থাকা শহরের বেশ কিছু স্থাপনাসহ সওজের জায়গার প্রেস ক্লাব ভবন উচ্ছেদ করা হয়েছে। শহরের প্রধান সড়ক প্রশস্তকরণ কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে সড়ক ও জনপথ বিভাগের সম্পত্তি এবং আইন কর্মকর্তা কামরুজ্জামান মিয়া এই উচ্ছেদ কার্যক্রমের নেতৃত্ব দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাটোর প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফারাজী আহম্মদ রফিক বাবন বলেন, ‘সড়কের যে অংশে রাস্তা ১০০ ফুট প্রশস্ত হবে, সেই অংশে প্রেস ক্লাবের অবস্থান নয়। ছুটির দিনে হঠাৎ নোটিশ না দিয়ে, কিছুদিন সময় দিয়ে ভবন উচ্ছেদ করা হলে তা শোভন হতো এবং আমরা ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতাম।’

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনসহ সওজ কর্তৃপক্ষর সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনও সহযোগিতা না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।