বেড়েই চলেছে যমুনার পানি, ভাঙনে বিলীন ২৫ ঘরবাড়ি

যমুনা নদীতে পানি বেড়েই চলেছে। বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে তীরে। এতে গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে নদী তীরবর্তী এলাকায় প্রায় ২৫ ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের আরকান্দি, ঘাটাবাড়ি, জালালপুর ও পাকুরতলা গ্রামের ব্যাপক নদী ভাঙনে বিলীন হয়েছে এসব ঘরবাড়ি। ভাঙনের কবলে পড়া পরিবারের লোকজন সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

শুক্রবার (২০ মে) সকালে ওই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নদী পাড়ের মানুষজন তাদের জিনিসপত্র সরিয়ে নিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। অনেকে গৃহস্থালি ও ঘরের আসবাব খোলা আকাশের নিচে জড়ো করে শিশু সন্তানদের নিয়ে আহাজারি করছেন।

ভাঙনকবলিত গ্রামের কামরুল ইসলাম, মহির মেম্বর, লালচাঁন ও আকসেদ আলী বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতের বৃষ্টিতে যমুনা নদীতে প্রচণ্ড ঢেউ শুরু হয়। এতে মুহূর্তে পাড়ের ২৫টি ঘরবাড়ি রাতের অন্ধকারে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। জীবন নিয়ে ঘর থেকে বের হতে পারলেও জিনিসপত্র খুব একটা রক্ষা করতে পারিনি। চোখের সামনে যমুনায় তলিয়ে গেছে সব। ফলে রাত থেকে তারা খোলা আকাশের নিচে বাস করছি।’

jamuna2

এ বিষয়ে জালালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ জানান, তিনি স্থানীয় ইউপি সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য দ্রুত সহযোগিতা চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছেন। কিন্তু এখনও কোনও সাহায্য সহযোগিতা হাতে পাননি। পেলে তাদের মাঝে বিতরণ করা হবে।

এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মো. শামসুজ্জোহা বলেন, ‘ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া সরকারের ত্রাণ তহবিল থেকে তাদের সাহায্য সহযোগিতার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এদের নিরাপদ স্থানে পুনর্বাসন করা হবে।’

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন বলেন, ‘নদীতে পানি বাড়লেও এখনও বিপৎসীমার নিচেই আছে। সিরাজগঞ্জ শহররক্ষা বাঁধ এলাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি ৭১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে আগামী তিন দিন এভাবেই পানি বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি পেতে থাকলে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে যমুনার পানি প্রবাহিত হবে।’

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘যমুনা নদীতে পানি বেড়েই চলেছে। আরও দুই-তিন দিন পানি বাড়বে। তবে এখনও বিপৎসীমার নিচে রয়েছে।’