২৫ হাজার ৭৯৪ লিটার তেল ১১০ টাকা করে বিক্রির নির্দেশ

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় জেলা পুলিশের অভিযানে জব্দ করা ২৫ হাজার ৭৯৪ লিটার তেল বিক্রির অনুমতি দিয়েছে জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। মঙ্গলবার (২৪ মে) বেলা ১২টার দিকে ওই আদালতের বিচারক মারুফ আল্লাম এ নির্দেশনা দেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, জব্দ করা তেল প্রতি লিটার ১১০ টাকায় করে বাগমারা এলাকার টিসিবির অনুমোদিত ডিলারের মাধ্যমে বিক্রির অনুমতি দিয়েছেন আদালত। জব্দ করা এসব ভোজ্যতেল রাষ্ট্রীয় সম্পদ। এগুলো দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা সম্ভব না। আবার বর্তমানে দেশে ভোজ্যতেলের সংকট ও তেলের মূল্য সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে রয়েছে। সার্বিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে বিচারক ফৌজদারি কার্যবিধির ৫১৬ ধারায় টিসিবির জন্য সরকার নির্ধারিত মূল্যে ভোক্তাদের মাঝে খোলা বাজারে বিক্রির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে রাজশাহীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ইন্সপেক্টর মো. আব্দুর রফিক বলেন, ‘বাগমারায় জব্দ করা ২৬ হাজার ৭২৪ লিটার তেলের মধ্যে ২৫ হাজার ৭৯৪ টিসিবি অনুমোদিত ডিলারের মাধ্যমে বিক্রির নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। বাকি ৯৩০ লিটার তেল বাগমারার মেসার্স মোবিদুল এন্টারপ্রাইজের মোবিদুল ইসলাম ও মেসার্স বেলাল ট্রেডার্সের রফাতুল্লাহ প্রামাণিক নামে দুই টিসিবির অনুমোদিত ডিলারকে সাধারণ ভোক্তাদের মাঝে ন্যায্যমূল্যে বিক্রির অনুমতি দিয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘তেল বিক্রির বিষয়ে বাগমারা থানার ওসিকে বিলি ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত কিছু নির্দেশনাও দিয়েছেন আদালত। সেগুলো হলো- ০.৩৫ শতাংশ বিক্রয় কর বাবদ প্রতি লিটার তেল ১০৫.৩৭ টাকায় বাগমারা থানা ডিলারদের বুঝিয়ে দেবেন। আদায় করা অর্থ বাগমারার ওসিকে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, রাজশাহীর হিসাবরক্ষক বরাবর জমা দেবেন। পরে হিসাবরক্ষক রাষ্ট্রের ফেরতযোগ্য কোডে চালানযোগে ওই অর্থ জমা করবেন। চলতি মাসের ২৮ ও ২৯ মে বাগমারার ঝড়গ্রাম ও জলপাইতলায় এসব তেল বিক্রি শুরু হবে।’

‘তেল বিক্রির সময় আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা ও বিক্রয় কার্যক্রম তদারকির জন্য একজন এসআইকে নিযুক্ত করবেন। বিক্রয় কেন্দ্রে একজনের কাছে দুই লিটারের বেশি এবং প্রতি লিটার ১১০ টাকার বেশি দামে যেন না বিক্রি হয় সেটিও এসআই নিশ্চিত করবেন। বিক্রয় কার্যক্রম শেষ হওয়ার পরপরই একটি প্রতিবেদন অনতিবিলম্বে আদালতে পাঠানোর জন্যও বাগমারা থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।’

প্রসঙ্গত, গত ৯ মে বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর বাজারপাড়া ও তেলিপাড়া এলাকার দুইটি গুদাম থেকে ১৯ হাজার ২২৪ লিটার সয়াবিন এবং সাত হাজার ৫০০ লিটার সরিষার তেল জব্দ করে জেলা পুলিশ। এই ঘটনায় তেল ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম স্বপনকে (৪০) গ্রেফতারও করা হয়। পালিয়ে যান মজুদকাণ্ডে যুক্ত স্বপনের বড় ভাই রফিকুল ইসলাম। তাদের দুজনের নামে ওই দিনই বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করে বাগমারা থানা পুলিশ।

রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতেখায়ের আলম জানান, শহিদুল ইসলাম স্বপনের এখনও জামিন হয়নি। সে কারাগারে আছে। আর তার বড় ভাই রফিকুল ইসলাম পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।