৬ দিনে জয়পুরহাটে ৭০ শিশু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত

জয়পুরহাটশীত আর ঘন কুয়াশায় জয়পুরহাটে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ছে। গত ছয়দিনে জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে ৭৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছে যার মধ্যে ৭০ জনই শিশু। তবে এদের বেশিরভাগই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, মঙ্গলবার বেলা ২টা পর্যন্ত হাসপাতালে ৩১ জন শিশু ভর্তি আছে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শীতের পাশাপাশি ঘন কুয়াশা পড়লে এই রোগের প্রকোপ বাড়ে। তবে শীত ও কুয়াশা থেকে শিশুদের সতর্ক রাখা গেলে এই রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটবে না বলে তারা মন্তব্য করেন।
মঙ্গলবার জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা চলছে। ডায়রিয়া বিভাগের তিনটি কক্ষে স্থান সংকুলান না হওয়ায় করিডোরের মেঝেতে অনেক শিশুর ঠাঁই মিলেছে।
এদিকে, শীতের ভেতরেই খোলা করিডোরে বিছানায় শুয়ে থাকা ডায়রিয়া আক্রান্ত দেড় বছরের শিশু সাদিক। তার মা ক্ষেতলাল উপজেলার ইকরগাড়া গ্রামের সুলতানা বেগম জানান, হঠাৎ করে তার ছেলে ১০ থেকে ১২ বার পানির মতো পায়খানা করছে। তাই মঙ্গলবার সকালে তাকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন তিনি।
একই দিনে নওগাঁ জেলার বদলগাছি উপজেলার ভোলা পালশা গ্রাম থেকে সোমা বেগম এসেছেন তাঁর ১৪ মাসের শিশু সন্তান মোস্তাকিমকে নিয়ে। তার শিশুরও একই অবস্থা। তার মল ত্যাগ কিছুতেই থামছে না। কিছু খাচ্ছেও না শিশুটি।
জয়পুরহাট সদর উপজেলার ইছুয়া গ্রামের শাপলা বেগম জানান, তার এক বছর বয়সের শিশু সিয়াম অসুস্থ হলে গত শনিবার তিনি হাসপাতালে ভর্তি করেন। কিন্তু কিছুতেই শিশুটি ভালো হচ্ছে না। এ অবস্থায় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য মঙ্গলবার তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়েছেন। চিকিৎসক ও নার্সরা ভালমতো চিকিৎসা দিচ্ছেন না বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হাসপাতালের স্টাফ নার্স শামিমা সুলতানা। তিনি জানান, গত ২৮ জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারির ২ তারিখ বেলা ২টা পর্যন্ত হাসপাতালের ডায়রিয়া বিভাগে ৭৪ জন রোগীকে তারা চিকিৎসা দিয়েছেন যাদের মধ্যে ৭০ জনই শিশু। বর্তমানে ৩১ জন রোগী ভর্তি আছে।  কক্ষে জায়গা না থাকায় ডায়রিয়া বিভাগের করিডোরে জায়গা করে দেওয়া হয়েছে। তাদের যথাসাধ্য সেবা দেওয়া হচ্ছে।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. আতাউর রহমান জানান, সাধারণত শীত ও ঘন কুয়াশা হলে রোটা ভাইরাস (ডায়রিয়া) বেশি দেখা দেয়। গত কয়েকদিনে শীত ও কুয়াশা বেড়ে যাওয়ায় শিশুরা রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, গত সোমবার এক ঘন্টার মধ্যে ২০ জন শিশু ভর্তি হয়েছে। তিনি শীত ও কুয়াশা থেকে শিশুদের সাবধানে রাখার পরামর্শ দেন।
/বিটি/টিএন/আপ-এআর/