৪ হাজার কৃষকের জমির দলিল খেয়ে ফেলেছে পোকা

প্রায় ১৩ বছর আগে সোনালী ব্যাংক হরিখালী হাট শাখা স্থানান্তর হলেও পুরনো ভবনে রয়ে গিয়েছিল মূল্যবান কাগজপত্র, দলিল, বন্দুক, কার্তুজ ও ফার্নিচার। দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত ভবনে থাকায় কৃষকের জমির দলিল ও মূল্যবান কাগজপত্র পোকা খেয়ে ফেলেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন প্রায় চার হাজার কৃষক। আবার ভবন কর্তৃপক্ষও ভাড়া বাবদ ব্যাংকের কাছে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা পাবে। এ অবস্থায় ভুক্তভোগী কৃষক ও এলাকাবাসী সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্টদের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

ব্যাংক সূত্র জানায়, গত ১৯৭৯ সালে বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার হরিখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বিতল ভবনের প্রথম তলায় সোনালী ব্যাংকের শাখা স্থাপন করা হয়। এরপর থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত হরিখালী হাট শাখাটি লোকসানি শাখা হিসেবে চিহ্নিত হয়। ২৮ বছরে ওই শাখায় লোকসান গুনতে হয়েছে প্রায় এক কোটি টাকা।

এ অবস্থায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ২০০৯ সালে শাখাটি সরিয়ে একই উপজেলার সৈয়দ আহম্মদ কলেজ স্টেশন এলাকায় স্থানান্তর করে। এরপর ১৩ বছর পেরিয়ে গেলেও হরিখালী হাট এলাকার ভবনে আটকে রয়েছে প্রায় চার হাজার কৃষকের দলিলপত্র, ব্যাংকের বন্দুক, কার্তুজ ও ফার্নিচার। দলিলগুলো ফেরত না
পাওয়ায় কৃষকদের বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে।

ভুক্তভোগী কৃষকরা জানান, জমির মূল দলিল, পর্চা ও খাজনা খারিজের কাগজপত্র হাতছাড়া হওয়ায় তাদের জমি বেদখল হয়ে যাচ্ছে। তারা প্রয়োজনে জমিগুলো কেনাবেচাও করতে পারছেন না। তবে তারা ব্যাংকের ঋণ পরিশোধের বিষয়ে কিছু বলতে রাজি নন। 

এদিকে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে ভবন ভাড়া বকেয়া থাকার বিষয়ে হরিখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, ভবন ভাড়া ও অন্যান্য বাবদ ব্যাংকের কাছে স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। ওই পাওনা পরিশোধ করে ব্যাংকের গচ্ছিত মালামাল নিয়ে যাওয়ার জন্য গত ২০১৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি লিখিতভাবে জানানো হয়। কিন্তু আজও ব্যাংকের লোকজন তাদের মালামাল সরিয়ে নেয়নি, বকেয়াও পরিশোধ করেনি। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোনালী ব্যাংক সৈয়দ আহম্মদ কলেজ শাখার ব্যবস্থাপক সাধন কুমার সরকার বলেন, ব্যাংকের হরিখালী হাট পুরাতন শাখায় কৃষকের প্রায় চার হাজার দলিলপত্র আটকা রয়েছে। এছাড়া ব্যাংকের আগ্নেয়াস্ত্র, গুলিসহ মূল্যবান কাগজপত্র ও ফার্নিচার দীর্ঘদিন ধরে পুরনো ভবনে পড়ে আছে। এসব মালামাল উদ্ধারে বেশ কয়েকদফা চেষ্টা চালালেও এলাকাবাসীর বাধার মুখে তা সম্ভব হয়নি। এছাড়া ব্যাংকের কাগজপত্র উদ্ধার না হওয়ায় প্রায় তিন কোটি টাকার খেলাপি ঋণও আদায় হচ্ছে না বলে জানান তিনি।