এখনও বিক্রি হয়নি ‘হিরো আলম’

ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। এরইমধ্যে নানা আকৃতির বড় গরুগুলোর বাহারি নাম নজর কেড়েছে সবার। নজর কাড়া গরুগুলোর মধ্যে একটি বগুড়ার ‘হিরো আলম’। সাদা-কালো রঙের সাড়ে ২২ মণ ওজনের ষাঁড়টির দাম আট লাখ টাকা চাচ্ছেন মালিক।

কোরবানি উপলক্ষে বিক্রির জন্য ষাঁড়টি প্রস্তুত করেছেন বগুড়া শহরের ফুলবাড়ি মধ্যপাড়ার খামারি জিয়াম হোসেন। হলস্ট্যান ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়টির দৈর্ঘ্য আট ফুট ও উচ্চতা সাড়ে পাঁচ ফুট। আদর করে নাম দিয়েছেন হিরো আলম। সাড়ে তিন বছরের ষাঁড়টির ওজন প্রায় ৯০০ কেজি। হিরো আলমকে দেখতে জিয়ামের বাড়িতে ভিড় করছেন মানুষজন।

আরও পড়ুন: ৩৫ মণের ‘রাজাবাবুর’ দাম ১২ লাখ

জিয়াম হোসেন বলেন, তিন বছর ধরে হিরো আলমকে লালন-পালন করছি।  উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের পরামর্শে দেশি খাবার খাওয়াচ্ছি। গম, চালের কুঁড়া, ভুসি, গমের ভুসি, ভুট্টা, ছোলা, খড় ও খৈলসহ প্রতিদিন ৫০০ টাকার খাবার লাগে তার। নিয়মিত গোসল করানো, পরিষ্কার রাখা, টিকা দেওয়া ও চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হয়। তবে বাড়িতে বেশি মানুষের ভিড় দেখায় হিরো আলম ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করছে না। দাম আট লাখ চাইলেও সাত লাখ টাকা হলে হিরো আলমকে বিক্রি করে দেবো।’

এদিকে, এবার বগুড়ায় আলোচনায় রয়েছে ‘বাংলালিংক’-এর নাম। ১৫০০ কেজি ওজনের বাংলালিংককে দেখতে গাবতলীর নাড়ুয়ামালা ইউনিয়নের বাওইটোনা গ্রামে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন মানুষজন। কোরবানির জন্য ফ্রিজিয়ান জাতের গরুটির দাম ১৫ লাখ টাকা চাইছেন মালিক। 

আলোচনায় রয়েছে ‘বাংলালিংক’-এর নাম

খামারের মালিক রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের গাবতলী শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক জহুরুল ইসলাম জুয়েল। তিনি বলেন, প্রায় সাড়ে চার বছর আগে বাড়ির পুরনো অস্ট্রেলিয়ান হলস্ট্যান ফ্রিজিয়ান গাভী একটি ষাঁড় বাচুর প্রসব করে। সেটি দেখতে অনেক সুন্দর ও নাদুস-নুদুস হওয়ায় নাম রাখি বাংলালিংক। গত কয়েক বছরে ষাঁড়টির প্রায় ১৫০০ কেজি ওজন হয়। একে নিজ জমিতে চাষাবাদ করা নেপিয়ার ঘাস, খড় ও ভুসি খেতে দেওয়া হয়। প্রতিদিন খরচ হয় ৫০০-৭০০ টাকা। কখনও কোনও ক্ষতিকারক ইনজেকশন বা মোটাতাজা করার চেষ্টা করিনি। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবে বাংলালিংককে লালন-পালন করেছি। কোরবানির ঈদে আট দাঁতের ষাঁড়টি ১৫ লাখে বিক্রি করবো। তবে কোনও হাটবাজারে নিয়ে বিক্রির চিন্তা আপাতত নেই।

আরও পড়ুন: ৩৫ মণের ‘রাজাবাবুর’ দাম ১২ লাখ

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, জেলার ১২ উপজেলায় ৪৬ হাজার ১৫ খামারি চার লাখ ২৭ হাজার ২৯৫টি গবাদিপশু কোরবানির উপযোগী করেছেন। এ বছর জেলায় কোরবানি ঈদে পশুর চাহিদা রয়েছে তিন লাখ ৫৯ হাজার ৩৭টি। সেই হিসাবে জেলায় অতিরিক্ত পশু রয়েছে ৬৭ হাজার ৯২০টি।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এ বছর কোরবানির পশুর সংকট নেই। চাহিদার বেশি পশু প্রস্তুত রয়েছে। সবচেয়ে বড় আকৃতির ষাঁড় গাবতলীর বাংলালিংক, শহরের রহমান নগরের ভারতী, ফুলবাড়ি মধ্যপাড়ার হিরো আলম ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ষাঁড়গুলো নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। তবে এখনও একটি বড় গরুও বিক্রি হয়নি।’