প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে সহকারী শিক্ষিকাকে কান ধরে ওঠবস করানোর অভিযোগ

রাজশাহীতে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে সহকারী শিক্ষিকাকে কান ধরে ওঠবস করানোর অভিযোগ উঠেছে। ফেসবুকে ছবি পোস্ট দেওয়ায় প্রধান শিক্ষিকা তাকে এ শাস্তি দিয়েছেন বলে জানা গেছে। একইসঙ্গে সহকারী শিক্ষিকার মোবাইল ফোনটিও কেড়ে নেন প্রধান শিক্ষিকা। পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের হাড়ুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

এ নিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষিকা বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) সকালে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ বিষয়ে সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষিকা নাজমা ফেরদৌসী গত বুধবার (২৪ আগস্ট) সকালে তার কার্যালয়ে সহকারী শিক্ষিকাকে ডেকে পাঠান। এ সময় প্রধান শিক্ষিকার স্বামী শাহ নেওয়াজ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি মোহনপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক। সেখানে বিদ্যালয়টির জমিদাতাও উপস্থিত ছিলেন। তাদের উপস্থিতিতে প্রধান শিক্ষিকা ওই শিক্ষিকাকে কান ধরে ওঠবস করান।

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রুনা লায়লাকে ঘটনাটি তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছি। আগামী রবিবার প্রতিবেদন দাখিল করবেন তিনি। পরে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষিকা বলেন, ওই শিক্ষিকা অন্য এক নারীর দেহের সঙ্গে আমার মুখমণ্ডল লাগিয়ে একটি ভিডিও তৈরি করেছেন। ভিডিওতে মেয়েটিকে নাচতে দেখা যাচ্ছে। তার সামনে দাঁড়িয়ে একজন পুরুষ মানুষ কথা বলছেন। ভিডিওটি সহকারী শিক্ষিকা তার নিজের ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন।

কান ধরে ওঠবস করানোর ব্যাপারে তিনি বলেন, আমি তাকে কান ধরে ওঠবস করাইনি। সহকারী শিক্ষিকা যে অপরাধ করেছেন, তা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার আওতায় পড়ে। মামলা থেকে বাঁচার জন্য এখন মিথ্যা অভিযোগ সাজিয়েছেন সহকারী শিক্ষিকা।

প্রধান শিক্ষিকা বলেন, সহকারী শিক্ষিকার স্বামী মারা গেছে। তার প্রতি সহানুভূতি দেখিয়ে মামলা করিনি। অথচ এখন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। 

ওই সহকারী শিক্ষিকা বলেন, প্রধান শিক্ষিকার মাথা জোড়া লাগিয়ে কোনও ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট দিইনি। প্রধান শিক্ষিকার বান্ধবীর সঙ্গে তোলা সুন্দর একটি ছবি ফেসবুকের স্টোরিতে দিয়েছিলাম। ওই ছবি প্রধান শিক্ষিকা নিজেই আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে দিয়েছিলেন।

তিনি আরও বলেন, সে সময় প্রধান শিক্ষিকা তিন দিনের ছুটিতে ছিলেন। গত রবিবার তিনি বিদ্যালয়ে এলে আরেক শিক্ষিকা ছবি দেওয়ার বিষয়টি বলে দেন। সেদিনই প্রধান শিক্ষিকা আমার ফোন কেড়ে নেন। এখনও ফেরত দেননি। ছবি দেওয়ার অপরাধে বুধবার আমাকে কান ধরে ওঠবস করান। আমাকে অন্যায়ভাবে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। বাধ্য হয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।