‘নির্বাচনে দ্বিতীয় স্ত্রীকে সমর্থন দিয়ে প্রথমজনকে তালাক দেওয়া অন্যায়’

রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচনে সংরক্ষিত ২ নম্বর ওয়ার্ডের নারী সদস্য পদে দ্বিতীয় স্ত্রীকে সমর্থন দিয়ে প্রথমজনকে চেয়ারম্যানের তালাক দেওয়ার ঘটনাকে অন্যায় বলছেন আইনজীবী ও সুশীল সমাজের লোকজন। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে।

নারী সদস্য পদে প্রার্থী হওয়ায় ১৫ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় স্ত্রীকে সমর্থন দিয়ে প্রথমজনকে তালাকের নোটিশ দেন বাগমারা উপজেলার মাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল হক।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট রাজশাহীর কো-অর্ডিনেটর অ্যাডভোকেট সামিনা বেগম বলেন, ‘একজন প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক হিসেবে যে কেউ নির্বাচন করতে পারেন। এটি তার সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত অধিকার। আর ওই নারীর স্বামী তাকে নিষেধ করলে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন কিনা সেটাও তার ব্যক্তিগত স্বাধীনতা। যদি ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে বাধ্য করা হয় সেক্ষেত্রে আইনের আশ্রয় নিতে পারেন। তবে দ্বিতীয় স্ত্রীকে সমর্থন দিয়ে প্রথমজনকে তালাক দিয়ে অন্যায় করেছেন চেয়ারম্যান।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যানের প্রথম স্ত্রী নাছিমা বেগম বলেন, ‘আমি তালাকের বিষয়টি শুনেছি। তবে এখনও তালাকের নোটিশ হাতে পাইনি। এর আগেও তিনবার তালাক দিয়েছিল। তার অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করলেই তালাক দেয়। তার চেয়ারম্যান হওয়ার কোনও যোগ্যতা নেই। বাগমারা আসনের এমপি ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের ছোট ভাই হওয়ার কারণে এখন পর্যন্ত টিকে আছে। তার জনসমর্থন নেই। দিনরাত জুয়ার আসরে পড়ে থাকে। পরিষদের লোকজন বাড়ি এলে আমি কাজ করে দিই।’

আরও পড়ুন: নির্বাচনে দ্বিতীয় স্ত্রীকে সমর্থন দিয়ে প্রথমজনকে তালাক নোটিশ পাঠালেন চেয়ারম্যান

নাছিমা বেগম আরও বলেন, ‘চেয়ারম্যান নির্বাচনের সময় রেজাউল হককে ২০ লাখ টাকা দিয়েছি। মানুষের কাছ থেকে ধার করে, নিজের সবকিছু বিক্রি করে নির্বাচন করতে ওসব টাকা দিয়েছি। ওই টাকা পরিশোধ করলে আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবো। অন্যথায় নির্বাচন করবো।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান রেজাউল হক বলেন, ‘ছোট স্ত্রী ফিরোজা খাতুনকে সঙ্গে নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। অনেক আগে থেকেই রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা ছিল তার। এজন্য প্রার্থী হয়েছে।’

প্রথম স্ত্রীকে তালাক নোটিশ পাঠানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নিষেধ করার পরও মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ায় এবং সিদ্ধান্তে অটল থাকায় তালাক নোটিশ পাঠিয়েছি। এরপরও যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করে তাহলে ৩২ বছরের সংসার ভাঙতে বাধ্য হবো। যদি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেয় তাহলে তালাক নোটিশ ফেরত নেবো।’