ভ্যানচালককে হত্যার দায়ে ইউপি সদস্যসহ ৩ জনের যাবজ্জীবন 

পাবনায় মনিরুল খাঁ নামে এক ভ্যানচালককে হত্যার দায়ে ইউপি সদস্যসহ তিন জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

হত্যাকাণ্ডের ১১ বছর পর সোমবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে পাবনার বিশেষ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আহসান তারেক এ রায় ঘোষণা করেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট দেওয়ান মজনুল হক, আসামিদের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট তৌফিক ইমাম খান ও সৈয়দ আলী রেজা পারভেজ। 

সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- ফরিদপুর উপজেলার দিঘুলিয়া গ্রামের লিয়াকত হোসেনের ছেলে শাহীন আহমেদ, ছোট গোলকাটা গ্রামের মুন্নাফের ছেলে মো. আজম, কেনাই পশ্চিমপাড়া গ্রামের জয়নুল সরদারের ছেলে পুঙ্গুলি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মুকুল সরদার। আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। 

মামলার এজাহার ও চার্জশিট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ২১ জুন বিকাল থেকে মনিরুল ইসলামকে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরদিন বিকালে কেনাই মাঠের ফসলি জমি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মনিরুলের বাবা ইসাহাক আলী খাঁ ফরিদপুর থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।

মামলার তদন্তে উঠে আসে, মনিরুল ও আসামিরা পরস্পর বন্ধু। কেনাই মাঠে জুয়া খেলার পর মনিরুল জিতে যান। এ সময় জেতার টাকা নিয়ে অপর তিন জনের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে মনিরুলকে গলাটিপে হত্যা করে লাশ মাঠে ফেলে দেন তারা। এই ঘটনায় আসামিদের অন্তর্ভুক্ত করে ২০১৫ সালের ১ নভেম্বর চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। ১২ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ ও দীর্ঘ তদন্তের শেষে আজকে রায় ঘোষণা করা হলো। 

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী দেওয়ান মজনুল হক বলেন, ‘আদালত অপরাধীদের উপযুক্ত শাস্তি দিয়েছেন। এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’

আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে আমাদের মক্কেলরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আমরা উচ্চ আধালত আপিল করবো। আশা করি সেখানে আমরা ন্যায় বিচার পাবো।’