ক্ষেতলালে ইউপি নির্বাচন

চেয়ারম্যান প্রার্থী হলেন তৃতীয় লিঙ্গের সাথী, চলছে ব্যতিক্রমী প্রচারণা

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার বড়তারা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন সাথী নামে তৃতীয় লিঙ্গের একজন। ইতোমধ্যে সঙ্গীদের নিয়ে ব্যতিক্রমী নির্বাচনি প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

সাথী ক্ষেতলাল উপজেলার বড়তারা ইউনিয়নের হোপ গ্রামের বাসিন্দা। ছয় ভাই, তিন বোনের মধ্যে সাথী সবার বড়। কাগজে-কলমে তার নাম আলী আজম। নির্বাচনে তিনি প্রতীক পেয়েছেন চশমা। 

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, আগামী ২ নভেম্বর ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে সাথীসহ পাঁচ প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন। অন্যরা হলেন আওয়ামী লীগের মো. বোরহান উদ্দিন ফকির (নৌকা), স্বতন্ত্র আবদুল বারিক মণ্ডল (আনারস), মো. খলিলুর রহমান (মোটরসাইকেল) ও মো. নাজমুল হক (ঘোড়া)। 

তৃতীয় লিঙ্গের সাথী

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সিত্রাংয়ের প্রভাবে সোমবার বিকাল ৫টার দিকে উপজেলার নিশ্চিন্তা বাজারে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। এ সময় বাজারের চার মাথা মোড়ে ঢাকঢোল বাজাতে বাজাতে একটি পিকআপভ্যান আসে। পিকআপভ্যানের পেছনে ছিল দুটি ভটভটি। গাড়ি থেকে নেমে কয়েকজন হিজড়া সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে নাচতে শুরু করেন। তাদের নাচ দেখে জড়ো হন উৎসুক জনতা। এর ফাঁকে লিফলেট ও পোস্টার বিলি করে ভোট চাইতে শুরু করেন সাথী। তাকে ভোট দেবেন বলে আশ্বস্ত করেন ভোটাররা।

ওই এলাকার ভোটাররা জানান, শেষ মুহূর্তে প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। নির্বাচনে একমাত্র হিজড়া প্রার্থী সাথীর প্রচারণায় হিজড়ারা অংশ নিচ্ছেন। তারা নেচেগেয়ে ভোট চাচ্ছেন। তাদের ব্যতিক্রমী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন ভোটাররাও।

স্থানীয় ভোটার আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমাদের ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে পাঁচ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চশমা প্রতীকের প্রার্থী সাথীর নির্বাচনি প্রচারণা ব্যতিক্রম। এবার তাকে ভোট দেওয়ার কথা ভাবছি।’

সাথীর প্রচারণায় হিজড়া ও ভোটাররা অংশ নিচ্ছেন

সাথীর ছোট ভাই সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ছয় ভাই তিন বোন। সাথী সবার বড়। তিনি ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আমরা পরিবারের লোকজন, গ্রামবাসী ও হিজড়ারা তার পক্ষে কাজ করছি।’

চেয়ারম্যান প্রার্থী সাথী বলেন, ‘ভোটারদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। আমার ঘর-সংসার নেই। কাজেই আমাকে দুর্নীতি করে টাকাপয়সা জমাতে হবে না। নির্বাচিত হলে সরকারি সব সুবিধা জনগণের মধ্যে সঠিকভাবে বণ্টন করবো।’

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আনিছার রহমান বলেন, ‘আগামী ২ নভেম্বর উপজেলার এক নম্বর তুলসীগঙ্গা ও দুই নম্বর বড়তারা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের কোনও অভিযোগ পাইনি আমরা।’