সাবেক এমপি নাদিম মোস্তফা গ্রেফতার

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য, রাজশাহী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য নাদিম মোস্তফাকে গ্রেফতার করেছে জেলা ডিবি পুলিশ। মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) ১২টার দিকে রাজশাহী মহানগরীর পাঠানপাড়ার বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতেখায়ের আলম বলেন, দুপুরে নগরীর বোয়ালিয়া থানার পাঠানপাড়ার নিজ বাড়ি থেকে নগরীর বোয়ালিয়া থানার পুলিশের সহযোগিতায় রাজশাহী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল নাদিম মোস্তফাকে গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে ৮/১০টি মামলা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর বাজারে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের সময় আব্দুল মজিদ নামে এক পথচারী নিহত হন। ওই ঘটনায় পুঠিয়া থানায় করা হত্যা মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি ছিলেন নাদিম মোস্তফা। সেই মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তবে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ দাবি করেন, আগামী ৩ ডিসেম্বর (শনিবার) রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার অভিযানের নেমেছে পুলিশ। এরই অংশ হিসেবে নাদিম মোস্তফাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ। এ উপলক্ষে বিএনপির প্রস্তুতি চলছে। তবে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে রাজশাহীর রাজনীতিতে উত্তেজনা বিরাজ করছে। থানায় থানায় হাত বোমার বিস্ফোরণ ও উদ্ধারের ঘটনায় বিএনপির শত শত নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

রাজশাহী বিভাগে গত ছয় দিনে বিএনপির ৭৯০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে ১৯টি মামলা করেছে। অধিকাংশ মামলা বিশেষ ক্ষমতা ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা হয়েছে। বিএনপি বলছে, আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশ ঠেকাতেই পুলিশ বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ‘গায়েবি’ মামলা করছে। মামলাগুলোর এজাহারে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, সে ধরনের ঘটনা কোথাও ঘটেনি। এসব মামলায় এ পর্যন্ত বিএনপির ৩০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীর মোহনপুর, গোদাগাড়ী, বাগমারা, পুঠিয়া, দুর্গাপুর ও বাঘা থানায় একটি করে, বগুড়ায় ছয়টি, নাটোরের লালপুরে দুটি, জয়পুরহাট সদরে দুটি, সিরাজগঞ্জ সদরে, নওগাঁর পত্নীতলা ও রানীনগর থানায় একটি করে মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে পুঠিয়া থানা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি খোরশেদুল আলমসহ জয়পুরহাটের দুই মামলায় ১৩ আর বগুড়ায় ১৭ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আবু সাঈদ চাঁদ বলেন, সমাবেশ বানচালের উদ্দেশে পুলিশ নেতাকর্মীদের নামে এসব বানোয়াট মামলা করছে। কিন্তু এসব করে গণসমাবেশ বানচাল করা যাবে না। বিএনপির পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তা ঠেকানো যাবে না।

তিনি আরও বলেন, প্রত্যেক মামলায় কয়েকজন নেতার নাম উল্লেখ করে নাম না জানা আসামি করা হয়েছে কয়েকশ মানুষকে। এসব মামলায় এখনও কেউ গ্রেফতার না হলেও আমাদের আশঙ্কা, গণসমাবেশের আগে পুলিশের ধরপাকড় শুরু হবে। সে কারণেই ২০০ জন করে আসামি রাখা হচ্ছে।

রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতেখায়ের আলম বলেন, মিথ্যা মামলা করার অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন। যেটা প্রকৃত ঘটনা, সে অনুযায়ীই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কোনও সাধারণ মানুষ হয়রানি হবে না, যারা প্রকৃত অপরাধী তারা আইনের আওতায় আসবেন। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।