বিএনপির সমাবেশ শেষের আগেই রাজশাহীতে ডাকা পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার

রাজশাহী বিভাগে সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক টিটো বলেন, প্রশাসনের আশ্বাসে আমাদের ডাকা পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, শনিবার (৩ ডিসেম্বর) বিকালে ৩টা ২০ মিনিটে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যে ১০ দফা দাবি দিয়েছিলাম, সেগুলোর মধ্যে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের আওতায় যে দাবিগুলো তিনি সমাধান করতে পারবেন- সেগুলো তিনি আমাদের আগামী এক মাসের মধ্যে সমাধান করে দেবেন। আর যেগুলো তার আওতার বাইরে- সেগুলো তিনি পত্র দিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে চিঠি দিয়ে আইন সংশোধন করে জানাবেন।

এই নেতা আরও বলেন, পৌনে ৪টার মধ্যে মিটিং শেষে আমরা পরিবহনগুলোকে রাজশাহী থেকে ছেড়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে দিয়েছি। ঢাকা কোচসহ দূরপাল্লার বাসগুলো তাদের নির্ধারিত গন্তব্যে ছেড়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।

এর আগে, বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে ১০ দফা দাবি পূরণ না হওয়ায় রাজশাহীতে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছিল। এতে বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) থেকে রাজশাহী থেকে কোনও রুটে বাস ছেড়ে যায়নি। বাইরের কোনও বাসও রাজশাহীতে প্রবেশ করেনি। ঢাকাগামী কোচগুলোও সকাল থেকে বন্ধ ছিল। তবে ধর্মঘটের কারণে বাস বন্ধ থাকায় সকাল থেকে দুর্ভোগে পড়েছিলেন যাত্রীরা। এদিকে, আজ রাজশাহী মাদ্রাসা মাঠে বিভাগীয় গণসমাবেশ করছে বিএনপি। তাদের সমাবেশ শেষের আগেই ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে 

মানুষের ভোগান্তি ও বিএনপির সমাবেশের বিষয়ে চানতে চাইলে রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক টিটো বলেন, আমাদের এই দাবির সঙ্গে বিএনপির সমাবেশের কোনও সম্পর্ক নেই।

তাদের ১০ দফা দাবির মধ্যে ছিল, সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ সংশোধন, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে মহাসড়ক বা আঞ্চলিক মহাসড়কে থ্রি-হুইলার (নসিমন, করিমন, ভটভটি, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ইত্যাদি) চলাচল বন্ধ, জ্বালানি তেল ও যন্ত্রাংশের অস্বাভাবিক মূল্য হ্রাস, করোনাকালে গাড়ি চলাচল না করায় সব ধরনের ট্যাক্স মওকুফ করা, সব প্রকার সরকারি পাওনা (ট্যাক্স, টোকেন, ফিটনেস) অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি বন্ধ করা।

 বাকি দাবিগুলো হলো- চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স সংক্রান্ত নানাবিধ জটিলতা নিরসন করা, পরিবহনের যাবতীয় কাগজপত্রাদি বা সঠিক থাকা সত্ত্বেও পুলিশি হয়রানি বন্ধ করা, উপজেলা পর্যায়ে বিআরটিসির বাস চলাচল অতিসত্বর বন্ধ করা, ডিপো টু ডিপো চলাচল করা, মহাসড়কে হাট-বাজার আয়োজন বা পরিচালনা না করা, চলমান হাট বাজার অতিসত্বর উচ্ছেদ করা, যাত্রী ওঠানামার জন্য পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা, প্রত্যেক জেলায় ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ ও ট্রাক ওভারলোড বন্ধ করা।