বিষ মেশানো গম খেয়ে মারা গেলো ৪০ কবুতর

নাটোর সদর উপজেলায় ২০ জোড়া মৃত কবুতর উদ্ধার করা হয়েছে। কবুতরগুলোর মালিকদের দাবি, এগুলো বিষ মেশানো গমবীজ খেয়ে মারা গেছে।

সোমবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার তেবারিয়া ইউনিয়নের চন্দ্রকলা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। পরে মৃত কবুতরগুলো উদ্ধার করে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, শখ করে কবুতর পালন করছিলেন ওই গ্রামের যুবক রাজু, তারেক, বনি, সবুজ, মোজাম্মেল, রায়হান ও আসিফ। এক-দুই জোড়া থেকে তাদের এখন ২০ জোড়া করে কবুতর। কবুতরগুলোকে নিয়মিত বাড়িতে খেতে দিলেও মাঝে মাঝে উড়ে বাড়ির পাশে বিলের জমিতে গিয়ে বসে। কিছুক্ষণ পর আবার ফিরে আসে।

ওই যুবকদের দাবি, স্থানীয় কৃষক বাবু ও তেতুসহ কয়েকজন জমিতে গম বুনেছেন। কৃষকরা জমিতে গম ছিটানোর আগে তাতে বিষ মিশিয়েছে। আর ওই গম খেতে গিয়েই কয়েকদিন আগে মারা যায় বেশ কয়েক জোড়া কবুতর। বিষয়টি জানতে পেরে ওই যুবকরা কৃষকদের অনুরোধ করেন, তারা যেন বিষ দিয়ে অবলা প্রাণী না মারেন। কিন্তু সোমবার আবারও ওই কৃষকরা জমিতে বিষ ছিটিয়ে দেন। এতে মারা যায় ২০ জোড়ারও বেশি কবুতর।

কবুতর পালক রাজু বলেন, ‘গতকাল দুপুরের পর বাড়ির খাবার খেয়ে ঝাঁক বেঁধে উড়ে যায় কবুতর। বেশ কিছুক্ষণ পরও ফিরে না আসায় খোঁজ করতে বিলের পাশের জমিতে দেখি, শখের কবুতরগুলো মরে  গাছের ডালে, জমিতে ও এখানে-সেখানে পড়ে আছে। আমারসহ অন্য আরও কয়েকজনের মোট ২০ জোড়ার বেশি কবুতর মারা গেছে।’

রাজু আরও বলেন, ‘ঘটনার পর কৃষক বাবুর কাছে ছুটে যাই। জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘‘নিজের জমিতে বিষ দিয়েছি। কাউকে কি বলে বিষ দিতে হবে?’’ এ কথা শোনার পর আমি ফিরে আসি।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত কৃষক বাবু বলেন, ‘আমি জমিতে বিষজাতীয় পাউডার দিয়েছি। তবে সেজন্য কবুতর মরার কথা নয়।’

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ওমর আলী প্রধান জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 
পরিবেশকর্মী ফজলে রাব্বি জানান, কবুতর শুধু শখের পাখিই নয়, এরা ফসল ও পরিবেশের জন্য অনেক উপকারী। ওইভাবে বিষ দিয়ে কবুতর নিধন শুধু অন্যায়ই আর নিষ্ঠুরতাই নয়, বরং তা পরিবেশ তথা দেশের বাস্তুসংস্থানেরও ক্ষতি করার শামিল। এমন কাজ কেউ যেন না করে সেজন্য জনসচেতনতার পাশাপাশি স্থানীয় ও প্রশাসনিকভাবেও পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।