আবাসিক হোটেলটিতে গেলেই গোপন ক্যামেরায় ধারণ করা হতো ভিডিও

রাজশাহী নগরীর একটি আবাসিক হোটেলের রুমে গোপন ক্যামেরায় ভিডিও ধারণ করে এক শিক্ষার্থী দম্পতিকে ব্ল্যাকমেলের অভিযোগে হোটেলের ম্যানেজারসহ দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে রাজশাহী নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকায় অবস্থিত নিউ পপুলার-২ নামক ওই আবাসিক হোটেলের দুজনকে গ্রেফতার করে রাজপাড়া থানা পুলিশ। এর আগেও এ ধরনের বেশকিছু ঘটনা ঘটেছে এখানকার আবাসিক হোটেলগুলোতে।

গ্রেফতার দুজন হলেন- হোটেল ম্যানেজার শরিফ উদ্দিন (২৮) এবং হোটেল বয় আব্দুল নূর (১৯)। শরিফ উদ্দিনের বাড়ি নওগাঁর পোরশায়। আব্দুল নূরের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে।

জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর জনগুরুত্বপূর্ণ এলাকা। এখানে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল ও অসংখ্য বেসরকারি হাসপাতাল থাকায় রোগী ও স্বজনরাই এসব আবাসিক হোটেলে বেশি আসেন।

পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত রবিবার (২৯ জানুয়ারি) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী তার স্ত্রীকে নিয়ে রাতে ওই হোটেলে ওঠেন। তার স্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তারা হোটেলে ওঠার কিছু সময় পর শরিফ ও নূর গিয়ে দরজায় কড়া নাড়েন। তারা অতিরিক্ত অর্থ দাবি করেন। এ সময় দিতে না চাইলে, হোটেল কক্ষের ভেতরে থাকা গোপন ক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিও দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে। ওই রাতেই দুই শিক্ষার্থী হোটেল থেকে পালিয়ে যান।

কিন্তু পরদিন অভিযুক্ত দুজন দফায় দফায় তাদের কল করে তিন লাখ টাকা দাবি করেন। পরে বিষয়টি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এক নেতাকে জানান ভুক্তভোগী যুবক।

ওই ছাত্রলীগ ওই নেতা জানান, বিষয়টি জানতে পেরেই তিনি ওই হোটেলে আসেন। এসে তাদের ফোন চেক করে অবাক হয়েছে। শুধু যে এই শিক্ষার্থী দম্পতির ভিডিও নয়। আরও অনেক সাধারণ মানুষের ভিডিও করে রেখেছে তারা। যেটা বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে সেন্ড করে অর্থ দাবি করেছে। পরে তিনি পুলিশকে জানালে এর সত্যতা পেয়ে তাদের গ্রেফতার করে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নগরীর রাজপাড়া থানার ওসি এ এস এম সিদ্দিকুর রহমান জানান, এ ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হোটেলের মালিকসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি আইনে একটি মামলা করেছেন। গ্রেফতার দুজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদেরও গ্রেফতারের  চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া আরও কতজন এ ধরনের ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়েছেন- সেটিরও তদন্ত চলছে।