‘বিচারক-আইনজীবী একই পরিবারের দুটি সন্তান’

আইনজীবী ও বিচারক একই পরিবারের দুটি সন্তান উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘কখনও কখনও মতের মিল নাও হতে পারে। কিন্তু স্মরণ রাখতে হবে, এতে যেন বার ও বেঞ্চের সুসম্পর্ক নষ্ট না হয়। কারণ, অগণিত বিচারপ্রার্থী আমাদের (বার ও বেঞ্চ) মুখের দিকে তাকিয়ে আছেন। তাদের ন্যায়বিচার পাইয়ে দিতে হবে। ন্যায়বিচার দিতে হলে আমাদের সুসম্পর্ক বজায় রাখতেই হবে।’ 

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রায় ৯০০ বিচারক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আইনে অনুমতি না থাকলেও দেশের বিভিন্ন আদালত ভবন বা বার অ্যাসোসিয়েশন ভবন নির্মাণের জন্য নিজ তহবিল থেকে অনুদান দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’

বৃহস্পতিবার (০২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নাটোর জেলা আইনজীবী সমিতির নতুন ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রতিনিয়ত হাজার হাজার মানুষ ন্যায়বিচার পাবার আশায় আদালতের দ্বারস্থ হন জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‌‘আইনজীবীদের মাধ্যমে বিচারকের কাছে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন বিচারপ্রত্যাশীরা। কিন্তু মাঝেমধ্যে বিচারক এবং আইনজীবীর দ্বন্দ্বে বিচারকাজে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়। সেইসঙ্গে বিচারকাজে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। এসব দ্বন্দ্ব নিরসন জরুরি। কেননা বিচারক এবং আইনজীবী উভয়ের মধ্যে সুসম্পর্ক থাকলে ন্যায়বিচার নিশ্চিতে সহায়তা করে।’ 

জননেত্রী শেখ হাসনিার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে আমাদের সবাইকে সব ক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করতে হবে জানিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘বিচার বিভাগ নিয়ে বলা হয়, বার ও বেঞ্চ একটি পাখির দুটি ডানা। আমি বলি, আইনজীবী ও বিচারক একই পরিবারের দুটি সন্তান। কখনও কখনও মতের মিল নাও হতে পারে। লাগালাগি হতে পারে। কিন্তু স্মরণ রাখতে হবে, এতে যেন বার ও বেঞ্চের সুসম্পর্ক নষ্ট না হয়।’

আইনমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৪৮ সাল থেকেই মানুষের অধিকার এবং স্বাধিকার নিশ্চিতের লক্ষ্যে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার কাজ শুরু করেন। একপর্যায়ে তাদেরকে নিজ অধিকার বুঝে নিতে আন্দোলনের নামতে উদ্বুদ্ধ করেন। সে সময়ে হানাদার বাহিনীর নির্মম নির্যাতন ছাড়াও তাদের মাধ্যমে কারাভোগ করেন বঙ্গবন্ধু। পরবর্তীতে আদালতের মাধ্যমে জামিনে বের হয়ে আসতেন। সেসময় থেকেই বঙ্গবন্ধু আইনজীবী এবং বিচারকদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর সব আইনজীবী এবং আদালতের উন্নয়নে নানামুখী কর্মসূচি নেন বঙ্গবন্ধু। তিনি আইনজীবীদের সমন্বয়ে স্বল্প সময়ে সংবিধান তৈরি করেন।’

জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি রুহুল আমিন তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। 

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, আইনসচিব গোলাম সারওয়ার, নাটোরের জেলা জজ মো. শরীফ উদ্দীন ও নাটোরের সরকারি কৌঁসুলি সিরাজুল ইসলাম। 

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শেখ গোলাম মাহবুব, নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আনোয়ারুল হক, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সাজেদুর রহমান খান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম মালেক শেখ।