মেডিক্যালে চান্স পাওয়া দরিদ্র নাজিরাকে ৫০ হাজার টাকা দিলেন জেলা প্রশাসক

বগুড়া সদরের এরুলিয়া গ্রামের দরিদ্র নরসুন্দরের মেয়ে নাজিরা সুলতানা সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। তবে পরিবারে অভাবের কারণে তার ভর্তিতে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসন তার পাশে দাঁড়িয়েছে। জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বুধবার (১৫ মার্চ) দুপুরে তাদের বাড়িতে গিয়ে কুশল বিনিময় ও ভর্তিসহ অন্যান্য ব্যয় বহনে এককালীন ৫০ হাজার টাকা সহায়তা দিয়েছেন।

মেধাবী নাজিরা সুলতানা বগুড়া সদরের এরুলিয়া গ্রামের দরিদ্র নজরুল ইসলামের মেয়ে। তিনি ২০২০ সালে ছয়পুকুরিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাস করেন। ২০২২ সালে সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন। মেয়ে মেধাবী হওয়ায় অনেক কষ্টে তার লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে আসছেন বাবা। ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষায় ৭২ স্কোর নিয়ে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পান। তার মেরিট পজিশন ১৫৬৮।

এদিকে নাজিরা মেডিক্যালে ভর্তির সুযোগ পেলেও পরিবারের অভাবের কারণে ভর্তি ও অন্যান্য ব্যয় বহনে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। তার বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামের নজরে আসে। তিনি বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে তাদের বাড়িতে যান। সেখানে গিয়ে ভর্তি ও অন্যান্য ব্যয় বহনের জন্য ৫০ হাজার টাকার চেক হস্তান্তর করেন।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নাজিরা সুলতানা বলেন, ডিসি স্যার মেডিক্যালে ভর্তি ও তার লেখাপড়ার খরচ বহনে আর্থিক সহায়তা করেছেন। সমস্যা মিটে যাওয়ায় খুশি লাগছে। লেখাপড়া শেষ করে ভালো চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করবো। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।

এক প্রশ্নের উত্তরে নাজিরা বলেন, বাবা নাপিত হলেও আমি তার পেশা নিয়ে গর্বিত। কারণ এ গরিব বাবাই অনেক কষ্টে লেখাপড়া শিখিয়েছেন। আজ তার কারণেই আমি চিকিৎসক হতে যাচ্ছি।

নজরুল ইসলাম বলেন, ভর্তিতে অন্তত ২০ হাজার টাকা ও থাকা-খাওয়াসহ অনেক টাকার প্রয়োজন ছিল। জেলা প্রশাসক এগিয়ে আসায় তার প্রতি কৃতজ্ঞ। সবার কাছে মেয়ের জন্য দোয়া চাই।

জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, নাজিরা সুলতানা ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। অসচ্ছলতার কারণে ভর্তিসহ লেখাপড়া চালিয়ে নেওয়ার বিষয়ে পরিবার দুশ্চিন্তায় ছিল। অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে তার এ অদম্য ইচ্ছাশক্তিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। ভর্তি ফি, বই ও হোস্টেলে অবস্থানকালে ব্যয়ের জন্য এককালীন ৫০ হাজার টাকার আর্থিক অনুদানের চেক দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন নাজিরার মতো সব অদম্য শিক্ষার্থীদের পাশে আছে এবং থাকবে।