ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী, অভিযুক্ত গ্রেফতার

নাটোরের গুরুদাসপুরে ধর্ষণে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। শুক্রবার (২৫ আগস্ট) রাতে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা থানার হেলেঞ্চা এলাকা থেকে র‍্যাব-১০ এর সহযোগিতায় তাকে গ্রেফতার করে র‍্যাব-৫।

শনিবার বেলা ১১টায় নাটোর র‍্যাব অফিসে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে র‍্যাব-৫ এর অধিনায়ক রিয়াজ শাহরিয়ার, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত রাতে ওই এলাকায় অভিযান চালায় র‍্যাব। দীর্ঘ ১২ ঘণ্টার অভিযানে আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। 

তিনি জানান, ওই এলাকায় আসামির ছেলের শ্বশুরবাড়ি। সেখানেই আত্মগোপনে ছিল। তাকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হবে।

গ্রেফতার জাহিদুল খাঁ (৫৫) গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের বাসিন্দা।

এ বিষয়ে মামলার বাদী ও ভুক্তভোগী শিশুর দাদি র‍্যাব সদস্যদের ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি আসামির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও তার নাতনির সুস্থ, সুন্দর, সম্মানজনক ও নিরাপদ জীবন যাপনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকার ও প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।

ভুক্তভোগী শিশুর দাদি ও মামলার বাদী জানান, তার তিন ছেলের মধ্যে ছোট ছেলের ঘরের ওই নাতনি স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। তার প্রকৃত বয়স ১২-১৩ বছর। মেয়ের বাবা-মা পৃথক সংসার করায় ওই নাতনি তার কাছেই থাকে। তিনি মাঠে কাজ করে সংসার চালান।

তিনি জানান, অভিযুক্ত জাহিদুল খাঁ প্রতিবেশী দাদা হয়। সে প্রায়ই তার তার সঙ্গে কটু কথা বলে। বিষয়টি জানতে পেরে শিশুর দাদি ওই প্রতিবেশীকে বকাঝকা করে তার নাতনির সঙ্গে কথা বলতে নিষেধ করেন। ওই ঘটনার কিছুদিন পর গত বছরের নভেম্বর মাসে তাকে ধর্ষণ করে। এরপর কাউকে বলে তবে সে তাকে জবাই করবে- এমন ভয় দেখায়।

দাদি আরও জানান, ঘটনার প্রায় ছয় মাস পর শরীরের নানা পরিবর্তনে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে বিষয়টি খুলে বলে। এরপর আলট্রাসনোগ্রাফি করে তার অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে গত ১৮ জুন থানায় মামলা দায়ের করেন। এখন তার নাতনি সন্তানসম্ভবা।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোজাহিদুল ইসলাম জানান, আল্ট্রাসনো রিপোর্ট অনুযায়ী ৮ সেপ্টেম্বর সন্তান প্রসবের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে শারীরিক অবস্থাসহ পরবর্তী নানা শারীরিক ও মানসিক সমস্যা এড়াতে তার সিজারিয়ানের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

মামলার আইও এসআই আবুল কালাম জানান, মেয়েটি আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। আসামিকে র্যাব সদস্যরা হস্তান্তর করলে তাকে আদালতে চালান দেওয়া হবে।

গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্রাবণী রায় আসামি গ্রেফতার হওয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অন্তঃসত্ত্বা শিশুটির সিজারিয়ান খরচসহ চিকিৎসা সংক্রান্ত দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এখন থেকে সন্তান প্রসব পরবর্তী মেয়েটিকে প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাবারও উপজেলা প্রশাসন সরবরাহ করছে। ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী যাতে ন্যায়বিচার পায় সে বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।

গুরুদাসপুর থানার ওসি মনোয়ারুজ্জামান জানান, ওই মামলায় যাতে ভুক্তভোগী ন্যায়বিচার পান এর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে পুলিশ।