ফেসবুকে প্রেম, জয়পুরহাটে এসে বিয়ের পিঁড়িতে ফিলিপাইনের নারী

প্রেমের টানে জয়পুরহাটের ক্ষেতলালের যুবক আব্দুল্লাহ হেল আমানের (৩৭) সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন ফিলিপাইনের নারী মারিয়া ভেলাস্কো (৩৬)। ফেসবুকের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে শনিবার রাতে বাংলাদেশে আসেন মারিয়া। রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে প্রেমিক আমানের ক্ষেতলাল থানা এলাকার বাসায় বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে নববধূকে দেখতে ওই বাসায় ভিড় করেন এলাকার লোকজন। 

মারিয়া ভেলাস্কো দীর্ঘদিন সৌদি আরবে চাকরি করেছেন। সেখানকার চাকরি ছেড়ে বাংলাদেশে চলে আসেন তিনি। বিয়ের পর তার নাম রাখেন মারিয়া আমান। স্বামী আব্দুল্লাহ হেল আমান ক্ষেতলাল উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত শারফুল ইসলাম তালুকদারের বড় ছেলে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, দুই বছর আগে মারিয়ার সঙ্গে ফেসবুকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে আমানের। প্রেমের সূত্র ধরে বিয়ে করতে শনিবার রাতে সৌদি আরব থেকে ঢাকায় পৌঁছান মারিয়া।

প্রেমের সম্পর্কের বর্ণনা দিয়ে আব্দুল্লাহ হেল আমান বলেন, ‘২০২০ সালে প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে আমার ছাড়াছাড়ি হয়। তখন কিছুটা হতাশ হই। এরপর থেকে ফেসবুকে বেশি সময় কাটাতাম। ২০২১ সালে মারিয়ার সঙ্গে ফেসবুকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মারিয়া সৌদি আরবের একটি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। দুই বছর ধরে আমাদের প্রেম চলছিল। সম্প্রতি মারিয়া বিয়ে করার আগ্রহের কথা জানান। তখন বাংলাদেশে চলে আসতে বলি। আমি আমার পরিবারকেও বিষয়টি জানাই। তারাও রাজি হন। শনিবার রাতে সৌদি আরব থেকে মারিয়া ঢাকায় পৌঁছান। রবিবার দুপুরে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি আমরা।’

বিয়ের পর মারিয়া ভেলাস্কো বলেন, ‘নিজের ইচ্ছায় প্রেমের টানে আমানকে বিয়ে করার জন্য বাংলাদেশে এসেছি। তার পরিবারও আমাকে মেনে নিয়েছে। এখানে এসে খুব ভালো লাগছে।’

বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন আমানের প্রতিবেশী শিক্ষক আব্দুল হান্নান। তিনি বলেন, ‘আমান আমার ছাত্র ছিল। আজ তার প্রেমের ঘটনা জানতে পেরে বাসায় আসি। দুপুরে ইসলামি শরিয়া মোতাবেক ফিলিপাইনের নারীর সঙ্গে আমানের বিয়ে দিয়েছি আমরা। এতে কারও কোনও আপত্তি ছিল না।’

আমানের মা তেলাল কুসুমশহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসরিন আক্তার বলেন, ‘ফিলিপাইনের নারী মারিয়া ভেলাস্কোর সঙ্গে ফেসবুকে প্রেমের কথা আগেই বলেছিল আমান। শনিবার মারিয়া বাংলাদেশে চলে আসে। রবিবার দুপুরে তাদের বিয়ে দিয়েছি। এতে আমরা সবাই খুশি।’

ক্ষেতলাল থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে ওই বাসায় গিয়ে মারিয়া ভেলাস্কোকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি আমরা। তিনি নিজ ইচ্ছায় বাংলাদেশে এসেছেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাদের বিয়েতে আমাদের কোনও আপত্তি ছিল না।’