আজ বিভীষিকাময় ৩ মার্চ!

আজ বিভীষিকাময় ৩ মার্চ। ২০১৩ সালের এদিনের রাতে মসজিদের মাইকে জামায়াত নেতা সাঈদীকে চাঁদে দেখতে পাওয়ার ঘোষণা দিয়ে বগুড়া শহর ও কয়েকটি উপজেলায় তাণ্ডব চালায় বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা। ওই তাণ্ডবের আজ  তৃতীয় বর্ষপূর্তি।

ওইদিন সন্ত্রাসীদের তাণ্ডবের হাত থেকে জানমাল ও সরকারি সম্পদ রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ছোড়া গুলিতে হামলাকারীসহ মোট ১৩ জন নিহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বগুড়া শহর ও কয়েকটি উপজেলায় ১৪৪ ধারা জারি করেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট।

এসব ঘটনায় পুলিশ ও ক্ষতিগ্রস্তরা বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৫৬টি মামলা করেন। যার মধ্যে ৫২টি মামলায় দুই হাজার আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। বাকি মামলাগুলোয়ও চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত হয়েছে। মামলাগুলোর অধিকাংশ আসামি গ্রেফতার হয়েছেন বলে দাবি সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের।

নন্দীগ্রাম উপজেলা শিক্ষা অফিসে আগুন

এ বিষয়ে বগুড়ার পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আবদুল মতিন জানান, ২০১৩ সালের ৩ মার্চের ওই তাণ্ডবের ঘটনায় ৫২টি মামলা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। আসামিদের অধিকাংশই বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী। যাদের অনেককে আটকের পর জামিনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই রাতে ২টার পর ‘সরকার সাঈদীকে গোপনে ফাঁসি দিয়েছে, তাকে চাঁদে দেখা যাচ্ছে’ মসজিদের মাইকে এমন ঘোষণা দেয় জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মীরা। পরে ফজরের নামাজের পর লাঠিসোটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে রাস্তায় নেমে সন্ত্রাসী কায়দায় বিভিন্ন থানা ও পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করেন তারা।  

কালীতলা ইউনিয়ন পরিষদে দুর্বৃত্তদের তাণ্ডব

হামলাকৃত থানা ও ফাঁড়িগুলো মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বাণিজ্য মেলা, রেল স্টেশন, সদর থানা, ফুলবাড়ি, উপশহর, নারুলী, কৈগাড়ি থানা, স্টেডিয়াম পুলিশ ফাঁড়ি ও মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র অন্যতম। এ সময় সদর থানার অস্ত্রাগার ও আশপাশের মার্কেটগুলোতে লুটপাটের চেষ্ট করেন ওইসব তাণ্ডবকারীরা।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মমতাজ উদ্দিন, বগুড়া-১ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল মান্নান, রাকসুর সাবেক ভিপি হায়দার আলী ও দুপচাঁচিয়া আওয়ামী লীগ সভাপতির বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয় ওই তাণ্ডবে। এছাড়া শহরে এসএ পরিবহন ও করতোয়া কুরিয়ার সার্ভিস কার্যালয়েও অগ্নিসংযাগ ও লুটপাট করা হয়।

ক্ষতিগ্রন্ত নন্দীগ্রাম উপজেলা শিক্ষা অফিস

ওই তাণ্ডবে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় নন্দীগ্রাম উপজেলা। সেখানে থানাসহ ১৫টি অফিসে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে ১০ কোটি টাকার ক্ষতি করা হয়। এছাড়া শহরের বিভিন্ন স্থানে কাঠের গুঁড়ি ও বিদ্যুতের খুঁটি ফেলে সড়ক-মহাসড়ক অবরোধ করে বিআরটিসির বাস ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

/এসএনএইচ/এইচকে/