পাবনা-৩ আসনে পুনর্নির্বাচনের দাবি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কেন্দ্র দখল করে কারচুপি, জালভোটসহ নানা অভিযোগ এনে পাবনা-৩ আসনের ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর উপজেলার সব ভোটকেন্দ্র এবং চাটমোহর উপজেলার ছয়টি ভোটকেন্দ্রের ফলাফল বাতিল করে পুনর্নির্বাচনের দাবি করেছেন নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল হামিদ মাস্টার।

মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে পাবনা প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করে পুনরায় নির্বাচন চান তিনি।

লিখিত অভিযোগে ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল হামিদ বলেন, গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে পাবনা-৩ আসনে ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে। ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর উপজেলার ভোটকেন্দ্র থেকে নৌকার প্রার্থীর ছেলে ও তাদের সমর্থকরা আমার এজেন্টদের বের করে দিয়ে জাল ভোট দিয়েছে এবং অবাধে ভোট কেটে নিয়েছে। ভোটকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিসাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিসাইডিং অফিসারের সহযোগিতায় এসব অনিয়ম করা হয়েছে। এর মধ্যে অনেক ভোটকেন্দ্রের আমার পোলিং এজেন্ট এসব অভিযোগের সত্যতা জানিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, ব্যালট পেপার নিয়ে জোর করে সিল মেরেছে নৌকার লোকজন। অনেক কেন্দ্রের ভোটারদের তুলনায় ভোট বেশি কাটা হয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হয়েছে। ফলাফল পর্যালোচনা করে তার প্রমাণ মিলেছে। এ ছাড়া ব্যালটের মুড়ি বই অংশ পরীক্ষা করলে দেখা গেছে সেখানে ভোটারদের কোনও নম্বর বা স্বাক্ষর নেই। আবার নৌকার সমর্থকরা আমার সমর্থিত ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দিয়েছে। অনেককেই ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। এসব ভোটকেন্দ্রের ভোটার ও গ্রহণকৃত ভোটের সংখ্যা যাচাই-বাছাই করলে অসামঞ্জস্য ধরা পড়বে। কারচুপি করে বিজয়ী হওয়ার পর আমার সমর্থকদের মারধর করা হয়েছে। ৩০ জনের মতো হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। দেড় শতাধিক বাড়িতে ভাঙচুর করেছে নৌকার সমর্থকরা।

জেলা আওয়ামী লীগের এই নেতা আরও বলেন, এবারের নির্বাচনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি, উৎসবমুখর ও গ্রহণযোগ্য করতে প্রধানমন্ত্রী ও নির্বাচন কমিশন যে নির্দেশনা দিয়েছিলেন, তা প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। ভোটের ফলাফল নিয়ে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। পরাজয় নিশ্চিত জেনে ফলাফল নিজের পক্ষে নিতে নৌকার প্রার্থী ও তার ছেলে অনিয়ম ও ভোট জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছে।

পুনর্নির্বাচনের দাবি করে এই স্বতন্ত্র প্রার্থী বলেন, পাবনা-৩ আসনে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। আমি ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর উপজেলার সব ভোটকেন্দ্রের এবং চাটমোহর উপজেলার ছয়টি ভোটকেন্দ্রের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করছি। তাই যাচাই-বাছাই করে এসব ভোটকেন্দ্রের ফলাফল বাতিল করে পুনরায় নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে দাবি জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জিয়াউর রহমান টিটু, রিংকু সাহা, সুমন নূরসহ স্থানীয় প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ায় কর্মরত সংবাদকর্মীরা।

উল্লেখ্য, পাবনা-৩ আসনে বেসরকারি ফলাফলে নৌকার প্রার্থী মকবুল হোসেন বিজয়ী হয়েছেন। ১৭৬ কেন্দ্রে তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ১৯ হাজার ৪৬৯ ভোট। নিকটতম স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল হামিদ পেয়েছেন ১ লাখ ১৫৯ ভোট।

মকবুল টানা তিনবারের সংসদ সদস্য এবং জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। অন্যদিকে আবদুল হামিদ সদ্য পদত্যাগী চাটমোহর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য।