১১ বছর ধরে শয্যাশায়ী নাটোরের সিংড়া উপজেলার কলম ইউনিয়নের মহেশচন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক আত্তাব আলীর স্ত্রী হেলেনা বেগমকে (৪০) চিকিৎসা সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক। প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশে রবিবার (০৭ জুলাই) দুপুরে হেলেনার বাড়িতে গিয়ে খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি চিকিৎসায় সহযোগিতা দেওয়ার কথা জানান উপজেলা যুবলীগের নেতারা।
বাংলা ট্রিবিউনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিংড়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান লিখন। তিনি বলেন, ‘হেলেনা বেগমকে নিয়ে বাংলা ট্রিবিউনকে প্রকাশিত সংবাদটি দেখার পর তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক আমার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন। প্রতিমন্ত্রী দেশের বাইরে থাকায় আমাদেরকে হেলেনার বাড়িতে গিয়ে খোঁজখবর নেওয়াসহ পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেন। নির্দেশ অনুযায়ী রবিবার দুপুরে উপজেলা যুবলীগের নেতাকর্মীরা বাড়িতে গিয়ে তার খোঁজখবর নিয়েছেন। পরিবারটিকে ৩০ কেজি চাল, তিন কেজি ডাল, হলুদ, মরিচ, আলু, পেঁয়াজ ও তেলসহ খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে নগদ তিন হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। খাদ্যসামগ্রী শেষ হলে আবারও দেওয়া হবে। এ ছাড়া প্রতিমন্ত্রী দেশে ফিরলে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।’
কৃষক আত্তাব আলী বলেন, ‘খাদ্য সহায়তা পেয়েছি। যুবলীগের নেতাকর্মীরা বাড়িতে এসে বলেছেন প্রতিমন্ত্রী দেশে ফিরলে আমার স্ত্রীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করবেন। খাদ্য সহায়তার চেয়ে বেশি প্রয়োজন তার চিকিৎসা।’
এর আগে শনিবার ‘১১ বছর ধরে শয্যাশায়ী, পাশে দাঁড়ায়নি কেউ’ শিরোনামে বাংলা ট্রিবিউনে হেলেনা বেগমকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, মহেশচন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক আত্তাব আলীর স্ত্রী হেলেনা বেগম গত ১১ বছর ধরে শয্যাশায়ী। প্রথমবার স্ট্রোক করে হাত-পা প্যারালাইসিস হয়ে যায়। পরে আবারও স্ট্রোক করলে পুরো শরীর অচল হয়ে পড়ে। ইতোমধ্যে চিকিৎসা করাতে গিয়ে জমিজমা যা ছিল, সব বিক্রি করে দিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত আড়াই লাখ টাকা ঋণ নিয়ে চিকিৎসা করিয়েছেন। কিন্তু আজও উঠে দাঁড়াতে পারেননি। এখন বিছানায় শুয়েই দিন কাটে। টাকার অভাবে চিকিৎসা করানোর সাধ্য নেই পরিবারের। দীর্ঘ এতটি বছর এভাবে পার করলেও পরিবারটির পাশে দাঁড়ায়নি কেউ। আবেদন করেও পাননি কোনও জনপ্রতিনিধি কিংবা বিত্তবানের সহায়তা।