রাজশাহী বিভাগের ৮ কারাগারে বন্দি কমেছে ৩ হাজার

রাজশাহী বিভাগের আট কারাগারে এখনও ধারণক্ষমতার চেয়ে বন্দি প্রায় দ্বিগুণ। তবে গত বছরের আগস্ট মাসে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এসব কারাগারে বন্দি সংখ্যা কমেছে প্রায় তিন হাজার।

বিভাগের কারাগারগুলো থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহী বিভাগের আট কারাগারে হাজতি, কয়েদি বন্দি ধারণক্ষমতা আছে চার হাজার ৯১৭ জনের। এর মধ্যে পুরুষ চার হাজার ৬৮৩ ও নারী ২৩৪ জনের। সবশেষ গত ১৩ মে কারাগারগুলোতে বন্দি ছিলেন নয় হাজার ৭৪৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ নয় হাজার ৩৮৮, নারী ৩৬০ ও বন্দি মায়েদের সঙ্গে শিশু আছে ২৪ জন। 

কারাবিধি অনুযায়ী, একজন বন্দির থাকার জন্য ন্যূনতম ছয় ফুট করে দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের জায়গা থাকতে হয়। কারাগারে সেটা মানা সম্ভব হয় না। কারাগারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা বলছেন, ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি বন্দি রাখতে হয় বলে তারা কারাবিধি মানতে পারেন না। কারাগারে যথেষ্টসংখ্যক কারারক্ষী না থাকায় শৃঙ্খলা রক্ষা করাও কঠিন।

গত বছরের ৪ আগস্টের তথ্যমতে, ওই দিন কারাগারগুলোতে বন্দি ছিলেন ১২ হাজার ৬০৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ছিলেন ১২ হাজার ১১৪, নারী ৪৮৯ ও মায়েদের সঙ্গে শিশু ছিল ৪৯ জন। ৫ আগস্টের পর থেকে কারাগারগুলোতে হাজতি-কয়েদির সংখ্যা কমেছে। তারা জামিন নিয়ে কারামুক্ত হয়েছেন।

বিভাগের কারা উপমহাপরিদর্শকের (ডিআইজি প্রিজন) কার্যালয়ের দেওয়া তথ্যমতে, বর্তমানে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ধারণক্ষমতা এক হাজার ৪৬০। সেখানে ১৩ মে বন্দি ছিলেন দুই হাজার ৭১৫ জন। যা ধারণক্ষমতার প্রায় দ্বিগুণ। এর মধ্যে ১২৬ জন নারী বন্দি। তবে গত ৪ আগস্টে বন্দি ছিলেন তিন হাজার ৫৫১ জন।

বগুড়া কারাগারে বন্দি ধারণক্ষমতা ৭৭৫ জন। ১৩ মে পর্যন্ত বন্দি ছিলেন এক হাজার ৮৫১ জন। যা ধারণক্ষমতার দ্বিগুণের বেশি। এর মধ্যে ৭১ জন নারী বন্দি রয়েছেন। তবে গত বছরের ৪ আগস্টে ৭২০ জন ধারণক্ষমতার বিপরীতে বন্দি ছিলেন দুই হাজার ১৩৬ জন।

সিরাজগঞ্জ কারাগারে বন্দি ধারণক্ষমতা ৩৫২ জন। ১৩ মে ধারণক্ষমতার বিপরীতে বন্দি ছিলেন এক হাজার ৫৮ জন। যা ধারণক্ষমতার প্রায় তিন গুণ। এর মধ্যে ২৮ জন নারী বন্দি রয়েছেন। তবে গত বছরের ৪ আগস্টে ৩০৪ জন ধারণক্ষমতার বিপরীতে এ কারাগারে বন্দি ছিলেন এক হাজার ৫৯৬ জন।

নওগাঁ কারাগারে বন্দি ধারণক্ষমতা ৫৮৭ জন। ১৩ মে এই ধারণক্ষমতার বিপরীতে বন্দি ছিলেন এক হাজার ২৪৮ জন। যা ধারণক্ষমতার দ্বিগুণের বেশি। এর মধ্যে ৪৮ জন নারী বন্দি রয়েছেন। তবে গত বছরের ৪ আগস্টে সমান সংখ্যক ধারণক্ষমতার বিপরীতে এ কারাগারে বন্দি ছিলেন এক হাজার ৪৫১ জন।

পাবনা কারাগারে বন্দি ধারণক্ষমতা ৮২১। ১৩ মে এই ধারণক্ষমতার বিপরীতে বন্দি ছিলেন এক হাজার ৯১ জন। যা ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি। এর মধ্যে ২৬ জন নারী বন্দি রয়েছেন। তবে গত ৪ আগস্টে ৫৭১ জন ধারণক্ষমতার বিপরীতে এই কারাগারে বন্দি ছিলেন এক হাজার ৪০৭ জন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কারাগারে বন্দি ধারণক্ষমতা ৫৯৫ জন। ১৩ মে এই ধারণক্ষমতার বিপরীতে বন্দি ছিলেন ৬৫১ জন। যা ধারণক্ষমতার চেয়ে একটু বেশি। এর মধ্যে ২৪ জন নারী বন্দি রয়েছেন। তবে গত ৪ আগস্টে ১৭৫ জন ধারণক্ষমতার বিপরীতে এই কারাগারে বন্দি ছিলেন এক হাজার ১২ জন।

নাটোর কারাগারে বন্দি ধারণক্ষমতা ২০০ জন। ১৩ মে পর্যন্ত বন্দি ছিলেন ৬১১ জন। যা ধারণক্ষমতার তিন গুণ বেশি। এর মধ্যে ২১ জন নারী বন্দি। তবে গত ৪ আগস্টে এই কারাগারে বন্দি ছিলেন ৮১৯ জন।

জয়পুরহাট কারাগারে বন্দি ধারণক্ষমতা ১২৭ জন। ১৩ মে এই ধারণক্ষমতার বিপরীতে বন্দি ছিলেন ৫২৩ জন। যা ধারণক্ষমতার চারগুণের বেশি। এর মধ্যে ১৬ জন নারী বন্দি। তবে গত ৪ আগস্টে বন্দি ছিলেন ৬৩১ জন।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের কারা উপ-মহাপরিদর্শক মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘বন্দি কমেছে সব কারাগারে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া মন্তব্য করতে পারবো না।’