দাম্পত্য কলহে ফেসবুক লাইভে এসে ফ্রিল্যান্সারের ‘আত্মহত্যা’

বগুড়ার ধুনটে দাম্পত্য কলহে ফেসবুক লাইভে এসে বিষাক্ত ট্যাবলেট সেবন করে আত্মহত্যা করেছেন রাসেল আহম্মেদ (৩৫) নামে এক অনলাইন ফ্রিল্যান্সার। 

মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ধুনট পৌরসভার দক্ষিণ অফিসারপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। ১২টার দিকে তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। রাসেল ধুনট পৌরসভার পশ্চিমভরনশাহী গ্রামের সোনা মিয়ার ছেলে। তিনি ফ্রিল্যান্সিং করতেন। 

পরিবারের সদস্যরা জানান, রাসেল দেড় বছর আগে পাশের দক্ষিণ অফিসারপাড়ার লুৎফর রহমানের মেয়ে নাদিয়া আক্তার প্রেমাকে বিয়ে করেন। এর কিছুদিন পর শ্বশুরবাড়ি এলাকায় স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন। নানা কারণে তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়। সম্প্রতি স্ত্রী বাবার বাড়িতে যাওয়ায় তিনি বাসায় একাই ছিলেন। মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ঘরের দরজা বন্ধ করে ফেসবুক লাইভ শুরু করেন। ৫৪ মিনিট ৫৮ সেকেন্ডের লাইভে রাসেল বলেন, তিনি চিকিৎসা শাস্ত্রে কিছু লেখাপড়া করেছেন। অভিজ্ঞতা থাকায় তিনি অ্যালুমিনিয়াম ফসফেট সেবন করছেন। এটা সেবন করলে বাঁচার সম্ভাবনা নেই। তিনি তার স্ত্রী প্রেমাকে মুক্তি দিয়ে যাচ্ছেন বলে কান্নাকাটি করেন। এছাড়া মা ও বাবার কাছে ক্ষমা চান। আত্মীয়-স্বজনদের তার অসহায় বাবা-মাকে দেখার জন্য অনুরোধ করেন। 

এসব কথা বলে রাসেল ২০ মিনিটের মধ্যে পানি দিয়ে দুটি ট্যাবলেট সেবন করেন। একপর্যায়ে অচেতন হয়ে লুটিয়ে পড়েন। তার বোন ও পরিবারের সদস্যরা টের পেয়ে এসে জানালা দিয়ে ডাকাডাকি করে সাড়া পাননি। পরে দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাকে শজিমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। সেখানে দুপুর ১২টার দিকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

রাসেলের বাবা সোনা মিয়া বলেন, অন্যের ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পেরেছি ছেলে ফেসবুক লাইভে এসে বিষাক্ত ট্যাবলেট সেবন করে আত্মহত্যা করেছে। খবর পেয়ে ঘরের দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। স্ত্রীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় রাসেল আত্মহত্যা করেছে।

ধুনট থানার উপপরিদর্শক এসএম অমিত হাসান মাহমুদ বলেন, ‘দাম্পত্য কলহের কারণে আত্মহত্যা করেছেন রাসেল। লাশ শজিমেক হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্ত ও অন্য আইনি প্রক্রিয়া শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’