আ.লীগের দুই পক্ষে সংঘর্ষ

সাংসদের গাড়ি ভাঙচুর, আহত ৩০

রাজশাহীর দুর্গাপুরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ৩০ জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষের সময় স্থানীয় সাংসদের গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। শনিবার বিকেলে উপজেলার ৭ নম্বর জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদের বর্ধিত সভাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে।Durgapur AL Program Crash -01

স্থানীয়রা জানান, দুর্গাপুর উপজেলার রসুলপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জয়নগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় যোগ দিতে যান প্রধান অতিথি হিসেবে সংসদ সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ দারা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ও পৌর মেয়র তোফাজ্জল হোসেন। সেখানে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের কথা ছিল।

বর্ধিত সভা চলাকালীন দুর্গাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ গ্রুপের লোকজন বর্ধিত সভার মঞ্চে প্রবেশের চেষ্টা চালায়। এসময় মঞ্চের উপরে থাকে জয়নগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মকছেদ ও আওয়ামী লীগ নেতা মোজাম্মেলসহ তার সমর্থকরা বাধা দেয়। একপর্যায়ে মকছেদ ও আওয়ামী লীগ নেতা মোজাম্মেলের লোকজন আব্দুল মজিদের উপরে হামলা চালালে উভয় গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এসময় আব্দুল মজিদের লোকজন সাংসদের গাড়ি ভাঙচুর করে বলেও জানান স্থানীয়রা। 

হামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও দাউকান্দি কলেজের অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক, তার ভাই আবদুল মান্নান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মকছেদ, সাধারণ সম্পাদক জালাল শেখসহ ৩০ নেতাকর্মী আহত হয়। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

দুর্গাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, সভা শুরুর কিছুক্ষণ পর সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ এসে ঝামেলা শুরু করেন। তখন ঘটনাস্থল থেকে আমি দূরে ছিলাম। সেখান থেকে দেখি মাঠের মধ্যে লোকজনে ছুটাছুটি শুরু করেছে। এ ঘটনায় এমপি সাহেবের গাড়ি ভাঙচুর করে মজিদের কর্মীরা।Durgapur AL Program Crash -05

রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের সাংসদ আব্দুল ওয়াদুদ দারা বলেন, মজিদ সরদারকে সন্ত্রাসী হিসেবেই দুর্গাপুরের মানুষ জানে। জেলা আওয়ামী লীগের পদ বহন করে এরকম সন্ত্রাসী কার্যকলাপ মোটেই কাম্য নয়। এই সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে অবিলম্বে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মজিদ সরদার বলেন, চেয়ারম্যান প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য বর্ধিত সভা ডাকা হয়েছিল। এমপি সাহেব জয়নগর ইউনিয়নবাসীর মতামত না নিয়েই একটি কমিটি গঠন করেছিল। কিন্তু এলাকার নেতাকর্মীরা এ বিষয়ে মানতে পারেনি।

সাংসদের গাড়ি ভাঙচুরের বিষয়ে তিনি বলেন, বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা এমপি সাহেবের গাড়ি ভাঙচুর করতে পারে। আমি রাজশাহী আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি। আমি কেন সেখানে গিয়ে গোলযোগের সৃষ্টি করবো। আমি তার গাড়ির কাছেই যাইনি।

দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পরিমল কুমার চক্রবর্তী জানান, সংঘর্ষের সংবাদ পাওয়া মাত্রই সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এঘটনায় এখনও মামলা করা হয়নি।

/এমএম/আপ-এআর/