৩ বছর ধরে আকাশের নিচে চলছে পাঠদান!

ক্লাস চলছে

খোলা আকাশের নিচে তিন বছর ধরে ক্লাস করছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার চমুশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সরকার যখন পর্যায়ক্রমে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে পাঠদানে উদ্যোগ নিয়েছে তখন এ স্কুলের ২ শতাধিক শিক্ষার্থী আকাশের নিচে লেখাপড়া করছে। অথচ ফাটল ধরা বিদ্যালয় ভবনের স্থলে নতুন ভবন নির্মাণের কোনও উদ্যোগ নেই। 

১৯৯৩-৯৪ অর্থবছরে এই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩টি শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু কয়েক বছর যেতে না যেতেই ভবনগুলোয় ফাটল দেখা দেয়। ৩ বছর আগে ভোলাহাটের তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করে পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন। এরপর থেকেই ছাত্র-ছাত্রীরা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অস্থায়ীভাবে বাঁশের বেড়ার ৩টি শ্রেণিকক্ষে ক্লাস করছে। তবে স্থান সংকুলান না হওয়ায় তাদের আকাশের নিচেও লেখাপড়া করতে হচ্ছে। বর্তমানে বাঁশের বেড়ার ঘরগুলোর তিনটির মধ্যে দু’টির বেড়া ভেঙে পড়েছে।

আকাশের নিচে চলছে পাঠদান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভপতি ইমরান আলীসহ কয়েকজন অভিভাবক জানান, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কারণে দিনদিন ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলগামী করতে স্থানীয়দের সহযোগিতায় বাঁশের বেড়া দিয়ে ৩টি শ্রেণিকক্ষ তৈরি করা হয়। কিন্তু এখন সেগুলোও নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ঝড়-বৃষ্টিতে ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের লেখাপড়া চালাতে কষ্ট হচ্ছে।  

সহকারী শিক্ষক ওবাইদুল হক জানান, শুধু খোলা আকাশের নিচে নয়, বিদ্যালয়ে বিশুদ্ধ কোনও টিউবওয়েল পর্যন্ত নেই। এছাড়া ঘাটতি রয়েছে শিক্ষক, পর্যাপ্ত বেঞ্চ, চেয়ার ও টেবিলের।

স্কুল

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোশাররফ হোসেন জানান, বিদ্যালয় ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণার পর ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে সরকারের বিভিন্ন দফতরে  একাধিকবার আবেদন করেও কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। এ অবস্থাতে অভিভাবকরা এই বিদ্যালয়ে সন্তানদের ভর্তিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছে। এ বছর প্রায় ৩০ শিক্ষার্থী এ বিদ্যালয় ত্যাগ করেছে।

noname

এ ব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দিলরুবা বেগম জানান, দ্রুত ভবন নির্মাণে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম জানান, শিক্ষার্থীরা ৩ বছর ধরে খোলা আকাশের নিচে পড়াশোনা করছে। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ার বিষয়টি অধিক গুরুত্ব দিয়ে নতুন ভবন নির্মাণে উদ্যোগ নেওয়া হবে।

 

/এআর/এসটি/