কুড়িগ্রামে হচ্ছে প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল

আরাবির বয়স ১৬, জন্মের পর থেকেই সে পা সোজা করে দাঁড়াতে পারেনি। চেয়ার আর বিছানাতেই সীমাবদ্ধ তার জীবন। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওজন, দৈহিক আকার বাড়লেও চলাফেরার শক্তি কিংবা বুদ্ধি বাড়েনি। শারীরিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী আরাবির প্রতিদিনের সঙ্গী বাবা-মা এবং ছোট একটি বোন।

হাসপাতালের জন্য নির্বাচিত জায়গাআরাবির মত এমন হাজারও প্রতিবন্ধী শিশু রয়েছে কুড়িগ্রাম জেলায়। যারা অনেকে পরিবারের জন্য বোঝা, অনাদর আর অবহেলায় কাটাচ্ছে দিন। সমাজের অবিচ্ছেদ্য কিন্তু অবহেলিত এই সদস্যদের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি বিনোদনের সুবিধা সম্বলিত একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে কুড়িগ্রামে। কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. আমিনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সিভিল সার্জন ডা. আমিনুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল কাম পুনর্বাসন কেন্দ্র তৈরির জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক স্বাক্ষরিত একটি চাহিদাপত্র আমরা হাতে পেয়েছি এবং ভূমি বরাদ্দের জন্য জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট শাখায় তা পাঠানো হয়েছে।

বিশেষায়িত এই হাসপাতাল কাম পুনর্বাসন কেন্দ্রে প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি তাদের থাকা-খাওয়া ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে বলে জানান সিভিল সার্জন। স্থান নির্বাচন সংক্রান্ত প্রাথমিক কাজ শেষে খুব শিগগিরই হাসপাতাল নির্মাণের কাজ শুরু হতে পারে বলেও জানান তিনি।

জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (রাজস্ব) মো. রাফিউল আলম বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মাধ্যমে প্রাপ্ত স্বাস্থ্য অধিদফতরের চাহিদাপত্র অনুযায়ী প্রতিবন্ধীদের জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র তৈরির জন্য জেলা সদর হাসপাতালের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে ও জেলা শিশু পরিবার ভবনের পূর্ব দিকে (প্রতিবন্ধী স্কুলসংলগ্ন) স্থান নির্বাচন ও ৯.৩২ একর ভূমি বরাদ্দের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হবে।

জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, কুড়িগ্রামে মোট ত্রিশ হাজার আটশত ৪৪ জন প্রতিবন্ধী রয়েছেন। যার মধ্যে মাত্র দশ হাজার সাতশত ৫৮ জন সরকারের বিভিন্ন সুবিধা (প্রতিবন্ধী ভাতা) গ্রহণ করে থাকেন। বাকি প্রায় বিশ হাজার প্রতিবন্ধী কোনও ধরণের সুবিধা পায় না। প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল কাম পুণর্বাসন কেন্দ্র তৈরি হলে জেলার অসহায় এই জনগোষ্ঠী মানবিক সুবিধা ও পুণর্বাসনের সুযোগ পাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

/এমও/