এমপি-প্রকল্প কর্মকর্তার দ্বন্দ্বে থেমে আছে সেতু নির্মাণ

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নের মালভাঙ্গাপাতা খালের ওপর সেতুর নির্মাণ কাজ প্রায় ৬ মাস ধরে থেমে আছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মো. মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের সঙ্গে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) দ্বন্দ্বের কারণে সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। এতে আশেপাশের ৫টি গ্রামের মানুষ পড়েছেন চরম দুর্ভোগে।

থেমে আছে সেতুর নির্মাণ কাজসুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে মালভাঙ্গাপাতা খালের ওপর সেতু নির্মাণে ৩৫ লাখ টাকা অর্থ বরাদ্দ দেয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। ৪০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১২ ফুট প্রস্তর সেতুটি পিআইও’র তত্ত্বাবধানে মার্চ মাসে দরপত্র আহ্বান করা হয়। পরে সেতু নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পায় সুরভী এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি এপ্রিল মাসে সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করে। গত ৩০ জুনের মধ্যে সেতু নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু জুনের মধ্যে সেতুর চারটি পিলারসহ ৮০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়।

মালভাঙ্গাপাতা গ্রামের অধিবাসীরা জানান, স্বাধীনতার পর থেকে মালভাঙ্গাপাতা খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণের দাবি ছিল পশ্চিম চন্ডিপুর, মালভাঙ্গাপাতা, পুবচন্ডিপুর ও বোচাগাড়ি গ্রামের মানুষের। কিন্তু সেতু না থাকায় যোগাযোগের জন্য বাঁশের সাঁকো তৈরি করে এলাকার লোকজন। প্রতিদিন সাঁকোর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী ও চাকুরিজীবীসহ হাজারো নারী-পুরুষ ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। বর্ষা মৌসুমে নৌকা বা বিকল্প পথই একমাত্র উপায়।

তারা আরও জানান, দাবির প্রেক্ষিতে স্বাধীনতার ৪৫ বছর পর খালের ওপর সেতু নির্মাণ হচ্ছিল। কিন্তু সেতু নির্মাণ কাজের শেষ সময়ে হঠাৎ করে নির্মাণ কাজ থেমে যায়। এমপি ও পিআইও’র দ্বন্দ্বের কারণে কাজ বন্ধ থাকায় ৫ গ্রামের মানুষকে আরও বেশি দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সেতুর নির্মাণ কাজ করা হচ্ছিল। পিআইও ও ঠিকাদারের যোগসাজসে নিম্নমানের কাজ করার ফলে কয়েকদিনের মধ্যে ছাদ ধসে পড়ে। এ নিয়ে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দেওয়া আছে। তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত নির্মাণ কাজ স্থগিত রাখতে বলেছি।’

তবে প্রকল্প কর্মকর্তা (পিআইও) নুরুন্নবী সরকার বলেন, ‘কাবিটা প্রকল্পের বিল নিয়ে এমপি ও তার লোকজন আমার ওপর ক্ষুব্ধ। এ কারণে তিনি মিথ্যা অভিযোগ এনে কাজে বাধার সৃষ্টি করছেন। ফলে সেতুর কাজ সম্পন্ন করা যাচ্ছে না।’

সুরভী এন্টারপ্রাইজের ঠিকাদার জাকির হোসেন বলেন, ‘বন্যার কারণে ৩০ জুনের মধ্যে কাজ শেষ করা যায়নি। পরবর্তীতে স্থানীয় এমপির লোকজনের বাধায় কয়েক দফা সেতুর কাজ করার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।’ তবে সেতু নির্মাণ কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও ছাদ ধসে পড়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।

/এমও/